বরিশালে জাপার মেয়র প্রার্থীর সাক্ষাৎকার

নৌকার বিপর্যয় হবে, এটা বুঝতে পেরে নানা ফর্মুলা করা হচ্ছে

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। আগামীকাল সোমবার ভোট গ্রহণ। এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী ইকবাল হোসেন (তাপস)। আজ রোববার নগরীর অক্সফোর্ড মিশন সড়কে নিজের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে নির্বাচনের পরিবেশ, নিজের প্রত্যাশাসহ সার্বিক বিষয়ে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান

ইকবাল হোসেন
ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্ন:

প্রথম আলো: প্রচারপর্ব ছিল শান্তিপূর্ণ। ভোটের বিষয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?

ইকবাল হোসেন: প্রচার শান্তিপূর্ণ ছিল, অস্বীকার করব না। তবে মানুষ উৎকণ্ঠার মধ্যে আছে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ হবে কি না, তা নিয়ে। এই নির্বাচনও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো হয়ে যায় কি না। সব আলামত ২০১৮ সালের আলামতের মতোই। রোগ একটাই। এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আর আগেরবারের প্রার্থী একই পরিবারের। নির্বাচন সুষ্ঠু না হওয়ার আশঙ্কার দিকে যাচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা একজন প্রার্থীর পক্ষে তৎপর।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: ২০১৮ সালের নির্বাচনেও আপনি প্রার্থী ছিলেন। ভোট ডাকাতির অভিযোগে দুপুরের আগেই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন। এবার ভোটের ফলাফল মেনে নেবেন কি না।  

ইকবাল হোসেন: নৌকার বিপর্যয় হবে, এটা তাঁরা বুঝতে পেরেছেন। বুঝতে পারার কারণেই নানা ইকুয়েশন, ফর্মুলা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। ২০১৮ সালে ভোট ডাকাতির কারণে বর্জন করেছিলাম। পরিস্থিতি এমন হলে এবারও বর্জন করব। তবে শেষ পর্যন্ত আশা তো করতে চাই, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে যা ফলাফল হবে, তা–ই মেনে নেব।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: বরিশালের পুলিশ কমিশনার বলেছেন, কোনো বহিরাগত নির্বাচনী এলাকায় থাকতে পারবেন না। এখন কী পরিস্থিতি?  

ইকবাল হোসেন: বরিশালের কোনো হোটেল, মোটেল, গেস্টহাউস ফাঁকা নেই। সব আওয়ামী লীগের দখলে। পৌরসভার মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান, জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক; আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও আছেন। তাঁদের এখানে কাজটা কী? তাঁদের কেউ তাড়ায় না কেন? গতবারও এটাই হয়েছিল। বহিরাগতরা বহাল তবিয়তে আছেন। তাঁরা কে কোন কেন্দ্রে থাকবেন, সেটাও দায়িত্ব দেওয়া হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানানোর পরও কোনো উত্তর দেয়নি।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা তো বলছেন ভোট সুষ্ঠু হবে। আপনি কি তাঁদের কথায় আশ্বস্ত হতে পারছেন না?

ইকবাল হোসেন: নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা তাঁদের দায়িত্ব পালনে অক্ষম। তাঁরা বহিরাগত ব্যক্তিদের বের করতে পারছেন না। ইসি তো কোনো প্রার্থীর চাকরি করে না। এটা পক্ষপাতমূলক।

প্রশ্ন:

প্রথম আলো: শেষ সময়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি কী? ভোটারদের কী বার্তা দেবেন?

ইকবাল হোসেন: নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি একটাই—সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট দেন। যে অভিযোগ করেছি, সেগুলো আমলে নেন। বহিরাগত ব্যক্তিদের তাড়িয়ে দেন। সরকারি সংস্থার অপতৎপরতা বন্ধ করে দেন। ভোটারদের বলব, শেষ পর্যন্ত গাজীপুরে সুষ্ঠু ভোট হয়েছিল। ভোটাররা যেন সদলবলে ভোটকেন্দ্রে আসেন এবং বহিরাগতদের প্রতিহত করেন।