আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চাইলে যা ‘মানতে হবে’

আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেকে দলের জনপ্রতিনিধিদের নামে বদনাম ছড়ান। যাঁরা এটা করবেন, তাঁদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দলীয় সভাপতি।

মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দলেরই যেসব নেতা বদনাম ছড়াচ্ছেন, তাঁদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার না করতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল শনিবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, নেতা-কর্মীদের কাজ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসন ও অপকর্ম তুলে ধরা। কিন্তু তা না করে অনেকে দলের জনপ্রতিনিধিদের নামে বদনাম ছড়ান। যাঁরা এটা করবেন, তাঁদের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র দলীয় সভাপতির এমন বক্তব্য ও নেতাদের সতর্ক করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে কাদা–ছোড়াছুড়ি নিয়ে একাধিকবার কথা বলেছেন। মূলত আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় ঐক্য বাড়ানো এবং বিভেদ কমানোর লক্ষ্যে একই বিষয়ে আবারও কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের সুফল প্রচার করতে বলেছেন।

এর আগে ৬ আগস্ট গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা হয়েছিল। ওই সভায় দলীয় সভাপতি ঘোষণা দিয়েছিলেন, যাঁরা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের ‘ভারমুক্ত’ করা হয়েছে। আর গতকাল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বিভিন্ন কমিটির ভারপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শুরু হয় সন্ধ্যা সাতটায়। প্রথমে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সূচনা বক্তব্য দেন। এরপর শোক প্রস্তাব পাঠ ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। বৈঠক সূত্র জানায়, সাংগঠনিক সম্পাদকদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, নতুন কমিটি করার সময় তাঁদের বাদ দেওয়া যাবে না।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেনের প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক সুনামগঞ্জ জেলা শাখার কমিটিতে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ করেন। এ সময় তাঁর কথার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন আহমদ হোসেন। তিনি বলেন, উনি (জেবুন্নেছা হক) দুজনের নাম সুপারিশ করেছেন।

এর মধ্যে একজনকে রাখা হচ্ছে। তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর (জেবুন্নেছা) দুই বা এক নামের বিষয় না, উনি (জেবুন্নেছা) যেভাবে বলেছেন, ওইভাবে যাতে কমিটি হয়, এখানে দলের ত্যাগী নেতা কেউ বাদ যাচ্ছে কি না, সেটা দেখতে হবে।’

বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সুধী সমাবেশের আয়োজন করবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। এ কারণে আগামী ২ সেপ্টেম্বর সিলেটে দলের জনসভা স্থগিত করা হয়েছে। এই জনসভার তারিখ পরে চূড়ান্ত করা হবে। এ ছাড়া খুলনা ও কুমিল্লাতেও আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভা করবেন।