গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতা চাইলেন মঈন খান

সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির দুজন নেতাকে দেখতে গিয়ে আজ সোমবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানছবি সংগৃহীত

দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি বলেছেন, ‘বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সহযোগিতায় আমরা দেশকে অল্প সময়ের মধ্যে স্বাধীন করতে পেরেছি। আজকে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারেও আমরা বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করছি।’

আজ সোমবার সকালে সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতা আনোয়ারুজ্জামানকে দেখতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। পরে কারামুক্ত আরেক নেতা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমের হাতিরপুলের বাসায় যান মঈন খান। তিনি কারামুক্ত নেতাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। সেখানেও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মঈন খান।

বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতা মঈন খান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি একদলীয় শাসনের জন্য বন্ধুরাষ্ট্রের সহায়তা চায়, আমরা বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য বন্ধুরাষ্ট্রের সহায়তা চাই।’

বাংলাদেশে প্রথম বাকশাল হয়েছিল ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে। বর্তমানে ‘বাকশাল–টু’ কায়েম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আবদুল মঈন খান। এ ক্ষেত্রে টাইম ম্যাগাজিনকে উদ্ধৃত করে মঈন খান বলেন, বিশ্ববিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন বলছে, আজকে বাংলাদেশে যেটা হয়েছে, সেটা বাকশাল–টু। প্রথম বাকশাল হয়েছিল ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে।

এ প্রসঙ্গে মঈন খান বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে ‘এনডিআই’এবং ‘আইআরআই’-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সবাই বলছেন ৭ জানুয়ারি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। সরকার তা মেনে নিতে নারাজ। ক্ষমতাসীনরা বলছেন, বন্ধুরাষ্ট্রের সহযোগিতায় তারা ক্ষমতায় এসেছেন। তাদের কথায়ই প্রতীয়মান হয়, জনগণের ভোটে তারা ক্ষমতায় আসেননি।

‘সরকারের ব্যর্থ প্রকল্প’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঈন খান বলেন, এই সরকার বিএনপিকে ভেঙে নির্বাচনে আনার জন্য অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ সাহেবকে (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান) দিয়েও চেষ্টা করেছিলেন। সে প্রকল্পে ফেল করলে আরও প্রকল্প নিয়েছিল। হাফিজ সাহেবকে নিয়ে গণমাধ্যমে যেটি এসেছে, সেটি সরকারের ব্যর্থ প্রকল্পের বহিঃপ্রকাশ। সরকার যে অপচেষ্টা করেছিল, সেটি সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাঁকে শহীদ জিয়ার আদর্শ থেকে দূরে সরাতে পারেনি।

মঈন খান আরও বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, জনগণ সে গণতন্ত্র ফেরত চায়। আজকে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখা হয়েছে। উন্নয়নের নামে জনগণের পকেট কাটা হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার কাজ ৩০ হাজার কোটি টাকায় করা হচ্ছে। উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে, আর কাফফারা দিচ্ছে জনগণ।

নেতা-কর্মীদের গুম, খুন ও কারা নির্যাতনের উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে থাকে এভাবে চিরদিন বন্দুক, টিয়ার গ্যাস, গ্রেনেড দিয়ে ক্ষমতায় থাকবে—এটা একটা দুরাশা মাত্র। মরীচিকার স্বপ্ন নিয়ে সরকার বাংলাদেশে টিকে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে ইনশা আল্লাহ।’

মঈন খানের সঙ্গে ঢাকা মহানগর বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।