সরকারি দলের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হঠাৎ করে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচার-প্রোপাগান্ডা হচ্ছে। এটা ষড়যন্ত্রের অংশ, কিন্তু তারপরও এগুলো সত্য। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে কেন চলে যান—এ প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আইনকে ভয় পান মানে হচ্ছে তাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে কামরুল ইসলাম কথাগুলো বলেন।
দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সৎ রাষ্ট্রনায়ক আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের ব্যাংক লুটেরা, অর্থ পাচারকারীরা এবং এই দুর্নীতিবাজেরা আমাদের গায়ে চুনকালি মাখতে পারে না। ক্যাসিনো–কাণ্ডে যেমনিভাবে বিচার করা হয়েছিল, তেমনিভাবে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’
দলীয় নেতা–কর্মীদের দুর্নীতিতে ছাড় দেওয়া হয় না দাবি করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ইদানীং যেসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আমি বিশ্বাস করি, এগুলো একটা ষড়যন্ত্রের অংশ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হঠাৎ করে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচার–প্রোপাগান্ডা করা হচ্ছে। দেশের মানুষের সন্দেহ হয়, আজকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়টি সামনে এসেছে। কিন্তু এ কথা স্বীকার করতে হবে, যাদের বিরুদ্ধে আজকে অভিযোগ, তারা কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে কেন চলে যায়?’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে বেনজীর সাহেব, ছাগল–কাণ্ডের কর্মকর্তা কেন আইনকে ভয় পায়? আইনকে ভয় পায় মানে হচ্ছে, তারা দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সেগুলো সত্য।’
বাংলাদেশ কোনো অবস্থায়ই দুর্নীতিগ্রস্ত বা দুর্নীতিবাজদের সহ্য করতে পারে না বলে উল্লেখ করেন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিএনপি কখনো তাদের দুর্নীতিবাজদের শায়েস্তা করতে পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময় মন্ত্রী-এমপিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। কিছুদিন আগে ক্যাসিনো–কাণ্ডে অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন।
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজনীতি যারা করি, আমাদের লজ্জা হয় এসব দুর্নীতিবাজ, ব্যাংক লুটেরার চিত্র দেখে।’
শাস্তি প্রয়োজন
সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য আরমা দত্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে আসছেন। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী মানুষ দুর্নীতি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এটাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেন, যারা পুকুর চুরি করে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর যৌক্তিক কারণ থাকতে পারে। এ সুযোগে যেন দুর্নীতিবাজেরা উৎসাহিত না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে।
বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। অর্থমন্ত্রী এ জন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে মডেল নিয়েছেন, একই মডেল যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে পাঁচ বছরেও সফল হয়নি। তিনি অর্থমন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আবার বসার আহ্বান জানান।