কারও দয়ায় এমপি-মন্ত্রী হলে তাতে সম্মান নেই: জি এম কাদের

জি এম কাদের
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, কারও দয়াদাক্ষিণ্যে এমপি-মন্ত্রী হলে তাতে কোনো সম্মান নেই। গণমানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার মধ্যেই প্রকৃত সম্মান। তাঁরা চান জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক। নির্বাচনের ফলাফল যা–ই হোক, সেটা কোনো বিষয় নয়।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর শ্যামপুরে জাপার কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে রাজনীতি করছি। এখন দুষ্টের দমন, শিষ্টের লালনের পরিবর্তে শিষ্টের দমন আর দুষ্টের লালন চলছে। নির্বাচনের মাধ্যমে শুধু মানুষের মুখ পরিবর্তন হলে দেশের ভাগ্য ফিরবে না। যদি মানুষের মুখের পরিবর্তন হয়, আর চাঁদাবাজি, দলবাজি, দুর্নীতি ও দুঃশাসন চলতেই থাকে, তাতে দেশের মানুষের কোনো উপকার হবে না।’

জাপার চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে সব মানুষ সব অধিকার সমানভাবে ভোগ করবে। সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী।

নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, দেশের মানুষ সীমাহীন কষ্টে আছে। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। নিত্যপণের মূল্যবৃদ্ধির কথা উঠলেই সরকারের পক্ষ থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলা হচ্ছে। অনেক দেশের উদাহরণ দিয়ে বলা হচ্ছে, তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে। কিন্তু সেসব দেশের মানুষকে সরকার নগদ টাকাসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে, রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, অথচ সামান্য কিছু টাকা ব্যয় করলেই রেশন কার্ডের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহের মাধ্যমে দেশের মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির প্রসঙ্গ তুলে জি এম কাদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হলো কিন্তু জড়িতদের শাস্তি হলো না। ডলার চুরির অভিযোগে অভিযুক্তদের কারও কারও পদোন্নতি হয়েছে, কেউ কেউ অবসরে চলে গেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ডলার চুরির ঘটনা ৩৮ দিন কেন গোপন রাখা হলো? বাংলাদেশ ব্যাংকের তখনকার গভর্নর কেন এর ব্যাখ্যা দিলেন না? ডলার চুরির দায় তিনিও এড়াতে পারেন না।

১১ বছর পরও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, ১১ বছরে ৯৫ বার তারিখ পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (সারা খাতুন) বলেছিলেন ঘাতকেরা চিহ্নিত হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেপ্তার হবে। ১১ বছর অতিবাহিত হলো, দেশের মানুষ জানতে পারল না কেন বা কারা এ নির্মম হত্যাযজ্ঞ ঘটাল। এত বড় হত্যাকাণ্ডের বিচার হচ্ছে না অথচ কারও যেন জবাবদিহি নেই।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাপার কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন, আলমগীর সিকদার, জহিরুল আলম, দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান সালমা হোসেন প্রমুখ।