এই সংগ্রামে অবশ্যই জয়ী হব: মির্জা ফখরুল

জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম বক্তব্য দেন
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সমগ্র জাতি জেগে উঠেছে। তাঁদের বিশ্বাস, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই সংগ্রামে তাঁরা অবশ্যই জয়ী হবেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে আজকে সমগ্র মানুষ জেগে উঠেছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিশ্বাস করি, অতি দ্রুত সমগ্র মানুষকে সংগঠিত করে গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম, বহুদলীয় গণতন্ত্র রক্ষা, বাংলাদেশকে রক্ষা করার যে সংগ্রাম, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামে আমরা অবশ্যই জয়ী হব।’

বিএনপির মহাসচিব দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একজন ক্ষণজন্মা মানুষ ছিলেন। তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে শুধু এই জাতির স্বাধীনতাযুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধ যুদ্ধ শুরু হয়নি, তিনি সেই যুদ্ধে নিজে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে।

পরবর্তীকালে জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে যখন এই জাতির সামনে একটা সংকট উপস্থিত হয়েছিল, যখন জাতির নেতৃত্ব শূন্য ছিল, দিকনির্দেশনা ছিল না, হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছিল সমগ্র জাতি, সেই সময় আবার এই মহান পুরুষের ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, নতুন স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশের মানুষ।’

মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে বড় অবদান ছিল, তিনি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং উন্নয়ন–অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, মানুষের অধিকারকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, একটি আধুনিক উদার বাংলাদেশের ভিত্তি তিনি রচনা করেছিলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুর্ভাগ্য এই মহান নেতাকে আমরা বেশি দিন ধরে রাখতে পারিনি। দেশের শত্রুদের হাতে তিনি শহীদ হয়েছিলেন। আজও আমরা তাঁকে স্মরণ করি এবং তাঁর জীবন-আদর্শকে অনুসরণ করে, তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচিকে সামনে নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি।’

বেলা ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়ার কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। তাঁরা প্রয়াত নেতার আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ, মীর নাসির, আহমেদ আজম খান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী খান, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ, মীর সরাফত আলী, শাম্মী আখতার, হারুনুর রশীদ, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এস এম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মহানগরের আমিনুল হক, নবী উল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আাজিজ উলফাত, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, যুবদলের মামুন হাসান, আবদুল মোনায়েম, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ।

পরে দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় বিএনপির উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কুদ্দুস, সিরাজউদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহসম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, ড্যাবের সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব আবদুস সালামসহ চিকিৎসকেরা ছিলেন।

কর্মসূচির মধ্যে আজ ভোরে সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বেলা তিনটায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হবে আলোচনা সভা।