মনে হচ্ছে, সরকার ভয় পেয়ে গেছে

জি এম কাদের
ফাইল ছবি

বিভাগীয় শহরে বিএনপির সমাবেশে নেতা–কর্মীদের বিপুল সমাগম যাতে না ঘটে, সেই চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। আজ শনিবার খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সেখানকার জেলা বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি যে পরিবহন ধর্মঘট পালন করছে, তা সরকারের ইন্ধনেই হচ্ছে। এখানে ধর্মঘট হলো একটা অজুহাত, যা যেকোনো মানুষই বুঝতে পারে। দেশে যদি গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকত, তাহলে যারা ধর্মঘট করছে, সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে বিএনপির সমাবেশের আগে বা পরে তা পালন করতে বলতে পারত।

সংবিধান অনুযায়ী, সভা–সমাবেশ করার অধিকার সবারই আছে। আওয়ামী সরকার যা (বিএনপির সভা–সমাবেশে জনসমাগমে বাধা) করছে, তা সংবিধানবিরোধী কাজ। মনে হচ্ছে, সরকার ভয় পেয়ে গেছে। বিএনপির গণসমাবেশে বিপুল জমায়েত হতে পারে, এ ধরনের একটা আতঙ্কে ভুগছে সরকার। তাদের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ বেশি হয়ে গেছে, এটা হয়তো সরকারের ধারণা। এ কারণে তারা জনসমাগম যেন বেশি না হয়, সেই চেষ্টা করছে। গণতান্ত্রিক সমাজ তো নয়ই, স্বাভাবিক সমাজের জন্যও এটা খুব একটা শুভলক্ষণ নয়।

গণতন্ত্রের চর্চা বাংলাদেশে তেমন একটা নেই। গণতন্ত্রের চর্চা যে করতে দেওয়া হচ্ছে না, সেটির একটা উদাহরণ হলো সভা–সমাবেশ ঘিরে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকার যদি মনে করে, তারা জনগণের প্রতিনিধি হয়ে দেশ চালাচ্ছে, তাহলে তাদের কথা শোনার ধৈর্য থাকতে হবে।

সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো যেকোনো মানুষকে কথা বলতে দিতে হবে। মানুষ যেন কথা বলতে পারে, তার জন্য সুযোগ–সুবিধা সৃষ্টি করতে দিতে হবে, বাধা নয়। যদি মানুষ যুক্তিসংগত কথা বলে তা শুনে সেই মোতাবেক কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। রাজার কথামতো নয়, জনগণের কথামতো চলবে দেশ। এটাই হলো গণতান্ত্রিক সমাজের নিয়ম। না হলে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে কীভাবে দাবি করে বর্তমান সরকার?

আমি মনে করি, যারা সমাবেশ করবে তাদের নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। সেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, সেটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখতে পারে। কিন্তু সমাবেশকে ঘিরে বাধা বা বিঘ্ন সৃষ্টি করা কোনো গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্যে পড়ে না।