সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তা না হলে যে ভয়াবহ পরিণতি হবে, তার দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে সতর্ক করেছেন জোটটির নেতারা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দমন-পীড়ন-নির্যাতন ও হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জোটের নেতারা। একই সঙ্গে হামলাকারীদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত এক সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা এসব কথা বলেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ বিষয়ে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জোটটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোটাব্যবস্থার যুক্তিসংগত সংস্কারের দাবি মানার ঘোষণার পরিবর্তে সরকার উসকানিমূলক বক্তব্যে দিচ্ছে। এ কারণে সংকট তৈরি হয়েছে। মন্ত্রীদের নির্দেশে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালাচ্ছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা, নারীদের ওপর হামলা অতীতের সব রেকর্ডকে হার মানিয়েছে।
প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে হামলার ছবি পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পরও এখনো অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা ও আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় জানিয়ে সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাতির গর্বিত অর্জন। মুক্তিযোদ্ধারা শ্রেষ্ঠ সন্তান। একে বিতর্কিত করা যাবে না।
সোমবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবন চত্বরে (সীমানাপ্রাচীরের মধ্যে) অবস্থানকারী আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বক্তারা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।