দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার সকাল আটটা থেকে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত।

যে ২৯৯ আসনে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে, তাতে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৩ লাখ, ৩৩ হাজার ১৫৭। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৫ লাখ ৯২ হাজার ১৬৯। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ১৪০। হিজড়া ভোটারের সংখ্যা ৮৪৮।

শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছেন একজন ভোটার। সকাল ৮টা ১৫ মিনিট, ৭ জানুয়ারি
ছবি : তানভীর আহাম্মেদ


নির্বাচন কমিশনের মোট নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৪৪। এর মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ২৮টি রাজনৈতিক দল। বিএনপিসহ নিবন্ধিত বাকি দল এবং আরও কিছু বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করেছে।

এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী ১ হাজার ৯৬৯। এর মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৩ আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা ৪৩৬।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষক ১১৭ জন। আর আমন্ত্রিত আছেন ৩২ জন।

গাজীপুরে মদিনাতুল উলুম আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা। সকাল ৮টা ২৫ মিনিট, গাজীপুর
ছবি : আশরাফুল আলম

নির্বাচনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪। আর ভোট কক্ষ আছে ২ লাখ ৬০ হাজার ৮৫৮।

ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আছেন ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ পুলিশ সদস্য।

আর ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আনসার ব্যাটালিয়নের সংখ্যা ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮।
নির্বাচনে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে আছে সেনা, নৌ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা। এর মধ্যে
সেনাবাহিনীর ৩৮ হাজার ১৫৪ জন সদস্য, নৌবাহিনীর ২ হাজার ৮২৭ সদস্য নিয়োজিত আছেন। আর দুর্গম এলাকায় ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া এবং নির্বাচনী কাজে ব্যবহারের জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা দিচ্ছে বিমানবাহিনী। বিজিবির ৪৫ হাজার ১৮৫, কোস্টগার্ড ২ হাজার ৫২০, র‍্যাবের ৬০০ টিম, রিজার্ভ টিম ৯৫, পুলিশ ১০ হাজার ১৯২ সদস্য এবং আনসার ব্যাটালিয়ন ৪৪ হাজার ২১২ সদস্য নিয়োজিত আছেন।

আজ সকালে রাজধানীর সিটি কলেজে নিজের ভোট দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

যে ২৮ দল নির্বাচনে আছে

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (প্রতীক নৌকা), গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) ও মো. মুজিবুল হকের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (প্রতীক লাঙ্গল), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও শেখ শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি-জেপি (প্রতীক বাইসাইকেল), দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (প্রতীক চাকা), বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম ও হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীকের নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (প্রতীক গামছা), মো. আরশ আলী ও ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রী পার্টি (প্রতীক কবুতর), আইভি আহমেদ ও মোহাম্মদ আলী ফারুকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (প্রতীক কুঁড়েঘর), রাশেদ খান মেনন ও ফজলে হোসেন বাদশার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (প্রতীক হাতুড়ি), অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশ (প্রতীক কুলা), হাসানুল হক ইনু ও শিরীন আখতারের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, প্রতীক মশাল), মোস্তফা আমীর ফয়সল ও এজাজুর রসুলের নেতৃত্বাধীন জাকের পার্টি (প্রতীক গোলাপ ফুল), সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও ড. সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন (প্রতীক ফুলের মালা) এবং শেখ ছালাউদ্দিন ছালু ও মো. ইদ্রিস চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (প্রতীক আম)।

আরও পড়ুন

৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়তে পারে, বললেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর

ভোট দিলেন সাকিব, আশা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়বে

ভোট দিলেন প্রধানমন্ত্রী, বললেন জনগণের ওপর বিশ্বাস আছে, নৌকার জয় হবে

অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে আরও আছে মো. জাকির হোসেন ও আহমেদ আলী শেখের নেতৃত্বাধীন গণফ্রন্ট (প্রতীক মাছ), অধ্যাপক ডা. এম এ মুকিত ও জাফর আহমেদ জয়ের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (প্রতীক কাঁঠাল), সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী ও আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বাধীন ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ (প্রতীক চেয়ার), মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক ও আবদুল আউয়াল মামুনের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (প্রতীক হাতঘড়ি), হাফেজ মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ও মুফতি ফয়জুল্লাহর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট (প্রতীক মিনার), মাওলানা এম এ মতিন ও অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (প্রতীক মোমবাতি), শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (প্রতীক হাতের পাঞ্জা), আবু লায়েস মুন্না ও মো. শাহজামাল আমিরুলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (প্রতীক ছড়ি), এস এম আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ (প্রতীক টেলিভিশন), কাজী রেজাউল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. ইয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ কংগ্রেস (নিবন্ধন প্রতীক ডাব), শমসের মুবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল বিএনপি (প্রতীক সোনালী আঁশ), শাহ মো. আবু জাফর ও ড. মো. শাজহাজানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম (প্রতীক নোঙ্গর), শাহাজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ ও মো. আব্দুল আজিজ সরকারের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (প্রতীক একতারা), মাওলানা হাফেজ আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী ও মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজীর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (প্রতীক বটগাছ) এবং গণফোরাম (প্রতীক উদীয়মান সূর্য)।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। বাছাই হয় ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।

মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর ভোট গ্রহণ চলছে আজ।