ঢাকা-৫: যাত্রাবাড়ীর এক কেন্দ্রে ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ২৮টি
ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনের আওতাধীন যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি কেন্দ্রে (নারী ভোটকেন্দ্র) দুই ঘণ্টায় দেড় শতাংশের কম ভোট পড়েছে। কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৯০৩। সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ২৮টি। ভোটের হার ১ দশমিক ৪৭।
কেন্দ্রটির নাম যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের (৩০ নম্বর কেন্দ্র) প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গোলাম দস্তগীর মাসুমের ভাষ্য, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের সংখ্যা বাড়তে পারে।
যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতর মোট ৬টি কেন্দ্র আছে, এর মধ্যে ৩২ নম্বর কেন্দ্রে (পুরুষ ভোটকেন্দ্র) ভোট পড়েছে ১৮১টি। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৩০২। ভোটের হার ৫ দশমিক ৪৮।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থিত ৩৩ নম্বর (পুরুষ ভোটকেন্দ্র) ভোটকেন্দ্রে ২ ঘণ্টায় ভোট পড়েছে মাত্র ১৬২টি, এখানে ভোটার সংখ্যা ৩৬ হাজার ২৬। ভোটের হার ৪ দশমিক ৪৬।
এই কেন্দ্রে ৩০ মিনিটের বেশি সময় অবস্থান করে দেখা গেছে, বাইরে নৌকা ও আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ভিড় থাকলেও কেন্দ্রের ভেতরে ভোটার সংখ্যা কম। ভোটারদের ভোট দিতে এসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।
এই তিন কেন্দ্রে নৌকা প্রতীক ও আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন আরও দেখা গেছে, নৌকা ও আওয়ামী লীগের দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে রিকশায় ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। এসব রিকশায় প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো রয়েছে।
ভোট দেওয়ার পর কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সহিংসতা হচ্ছে না এটাই বেশি। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে, এটাই সান্ত্বনা।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪টি ওয়ার্ড নিয়ে এই আসন গঠিত। ওয়ার্ডগুলো হলো-৪৮, ৪৯, ৫০, ৬০, ৬১, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬, ৬৭, ৬৮, ৬৯ ও ৭০। এই আসনের ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯০ হাজার ৭৬৪। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫১ হাজার ৫১৭ জন আর নারী ভোটার ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪ জন। হিজড়া ভোটার ৩ জন। ভোটকেন্দ্র ১৮৭টি।
সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, গোলাপবাগ, নুরপুর, পাটেরবাগ, ইসলামবাগ, জনতাবাগ, স্মৃতিধারা, রায়েরবাগ, জনতাবাগ, দনিয়া, সরাই, রসুলপুর, কুতুবখালী, ছনটেক, শেখদী, গোবিন্দপুর, কাজলার পাড়, মাতুয়াইল, কোনাপাড়া, মোমেনবাগ, রহমতপুর, মুসলিমনগর, মধুবাগ, খানবাড়ী, আদর্শবাগ, বামৈল, ডগাইর, সারুলিয়া এলাকা নিয়ে এই আসন গঠিত।
আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম। তিনি এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, নির্বাচনে প্রার্থীও হননি।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্না (নৌকা প্রতীক)। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র দুই প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা (ট্রাক প্রতীক) ও কামরুল হাসান (ঈগল প্রতীক)। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, এখানে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। বাকি প্রার্থীরা কেবল নামমাত্র।
এই তিনজনের মধ্যে নৌকার প্রার্থী হারুনর রশীদ (মুন্না) যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লা ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তাঁর বাবা এই আসনের চারবারের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল হাসান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি।
এই আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন—ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের আবু জাফর মো. হাবিব উল্লাহ (চেয়ার), বিএনএফের এস এম লিটন (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির আবু হানিফ (সোনালী আঁশ), ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল কাইয়ূম (মিনার), এনপিপির আরিফুর রহমান (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের নূরুল আমিন (ছড়ি), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোশারফ হোসেন মিয়া (একতারা), বাংলাদেশ কংগ্রেসের সাইফুল আলম (ডাব), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সারোয়ার খান (কাঁঠাল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান (তরমুজ) ও হাফিজুর রহমান (কবুতর)।