গণ-অভ্যুত্থানের নৈতিক ভিত্তি হারাতে চলেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কর্মী শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার এবং দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও শাস্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম।
ফয়জুল হাকিম বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কর্মী শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার ১১ দিন পার হলেও সরকার এখনো হত্যাকারীদের হদিস করতে পারেনি। অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন হাত-পা ছেড়ে বসে আছে। আসলে সরকার ক্রমশ গণ–অভ্যুত্থানের নৈতিক ভিত্তি হারাতে চলেছে।
ফয়জুল হাকিম আরও বলেন, হাদির মৃত্যুর শোকাহত পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে ১৮ ডিসেম্বর রাতে দুর্বৃত্তরা দৈনিক প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, ছায়ানট ও উদীচী কার্যালয়ে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেছে। নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। তিনি এই হামলাকে ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এক ফ্যাসিবাদী হামলা’ বলে অভিহিত করেন।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক বলেন, সমাজে ফ্যাসিবাদী প্রবণতা এতটা সংক্রামিত হয়েছে যে ধর্ম অবমাননার অজুহাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় গার্মেন্টস শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসকে একদল দুর্বৃত্ত পিটিয়ে মারার পরে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা নিশ্চিত করেছে।
আসন্ন নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ফয়জুল হাকিম বলেন, দেশে অস্থিতিশীলতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসন্ন নির্বাচন বানচাল করার সুগভীর ষড়যন্ত্রের সঙ্গে এসব ঘটনা সম্পর্কিত। সাম্রাজ্যবাদী ভারতের মদদে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অনুসারীরা এসবের সঙ্গে জড়িত।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সভাপতি কাজী ইকবাল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, মুক্তির মঞ্চের কর্মী হেমন্ত দাস ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক রফিক আহমেদ।
বক্তারা সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুততম সময়ে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।