জিয়াকে জড়িয়ে সেনা কর্মকর্তা হত্যার মামলা রাজনৈতিক ‘ষড়যন্ত্র’: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

১৯৭৫ সালের নভেম্বরে কর্নেল নাজমুল হুদা ও খালেদ মোশাররফসহ তিনজন সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় প্রয়াত জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে যে মামলা হয়েছে, সেটিকে সরকারের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ‘ষড়যন্ত্র’ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ রোববার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কর্নেল নাজমুল হুদা হত্যার ঘটনার ৪৭ বছর পর মামলা করেছেন তাঁর মেয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা এই মামলায় সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।  নগরীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির সংবাদ সম্মেলনে মূলত ওই মামলার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণ যখন গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে, এমন এক পটভূমিতে ৪৭ বছর পরে জিয়াউর রহমানকে জড়িয়ে একটি মামলা করা হয়েছে।’ বিএনপি মহাসচিব ওই মামলা দায়েরের ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেন।

এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ, কর্নেল নাজমুল হুদা এবং মেজর হায়দারকে রক্ষার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’  আর এই বক্তব্যের ব্যাপারে তিনি কর্নেল নাজমুল হুদার স্ত্রী নীলুফার হুদার লেখা একটি বইয়ের উদাহরণ দেন। ৭ নভেম্বরের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে  ‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’ শিরোনামে বই লিখেছেন নীলুফার হুদা। বইটি প্রকাশ হয়েছে ২০১১ সালে।

বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘মামলার বাদী নাহিদ ইজাহার খানের মা নীলুফার হুদার ওই বইয়েই ১৩৪ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে যে কর্নেল নাজমুল হুদা ও খালেদ মোশাররফসহ তিনজন সেনা কর্মকর্তাকেই রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘১৯৭৫ সালের নভেম্বরে খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানের ফলে সেনাছাউনিতে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তখন সেই সুযোগ নিয়ে লে. কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃত্বে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও জাসদ গণবাহিনীর নেতৃত্বে পাল্টা-অভ্যুত্থান সংঘটিত করে। সেনা অফিসার-সৈনিকদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে তারা নির্মম সেনা অফিসার হত্যার সুদূরপ্রসারী দেশি-বিদেশি চক্রান্তে শামিল হয়। যার নির্মম শিকার হন নাজমুল হুদা।’

তবে মামলায় লে. কর্নেল আবু তাহেরকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

এখন মামলা দায়েরের ঘটনাকে সরকারের ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে তাঁদের আন্দোলন যত এগিয়ে যাবে, এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের তরফ থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও ষড়যন্ত্র হবে বলে তাঁরা মনে করছেন।

বিএনপির এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।