সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত হচ্ছি, বাড়াবাড়ি করবেন না, বিএনপিকে ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

বিএনপি ‘শেষ বার্তা’ দিচ্ছে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে পাল্টা বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধান আমাদের নির্বাচনের চালিকা শক্তি। সংবিধান যা বলবে, আমরা তা-ই করব। বন্ধুদের পরামর্শ শুনব, কিন্তু সংবিধান থেকে আমরা একচুলও নড়ব না। এটা হলো আমাদের থেকে বার্তা।’ নাশকতা করতে বিএনপি ক্যাডার পালছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নাশকতার সমুচিত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। বাড়াবাড়ি করবেন না, খবর আছে৷’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ‘শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং মেধাবৃত্তি, দরিদ্র তহবিলে অনুদান ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক উপকমিটি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবার হত্যাকাণ্ড ও ৩ নভেম্বরের জেলহত্যায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জড়িত বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। আর তারেক রহমানকে ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের নায়ক উল্লেখ করেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আমরা মামলা দিইনি, মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই মামলায় তাঁর দণ্ড হয়েছে। আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডিত সেই আসামিকে মুক্তি দেওয়ার কোনো ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেই। তিনি দয়া ও মহানুভবতায় নির্বাহী আদেশে তাঁকে (খালেদা) বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছেন, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে জেলের কষ্ট থেকে রক্ষা করেছেন।’

টাকাপয়সা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ‘পকেট গরম’ বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘মাল-পানি চালান ভালোই আসছে। এখন তৈরি হচ্ছে শেষ বার্তা। আমাদের নাকি শেষ বার্তা! কোনটা বলল, বুঝলাম না—ক্ষমতা থেকে, নাকি দুনিয়া থেকে চলে যেতে হবে! কোথা থেকে পেলেন এই বার্তা, কেন দিচ্ছেন এই বার্তা?’ তিনি বলেন, ১৫ বছরে কমপক্ষে ১৫ শ বার্তা তারা (বিএনপি) দিয়েছে। একে একে ১৫ বছর চলে গেছে। কোনো বার্তায় কাজ হবে না। দেশের মানুষ যত দিন শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে, তত দিন কোনো বার্তা দিয়ে লাভ হবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি। আমাদের সংবিধান আমাদের নির্বাচনের চালিকা শক্তি। সংবিধান যা বলবে, আমরা তা-ই করব। বন্ধুদের পরামর্শ শুনব, কিন্তু সংবিধান থেকে আমরা একচুলও নড়ব না।’ তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন হবে, আশ্বস্ত করলাম দেশি-বিদেশি বন্ধুদেরও৷ আপনারা অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চান, আমরা বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করব।’

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নাশকতা করার জন্য কোনো হোটেল খালি নেই, সব বুকিং হয়ে গেছে। মির্জা ফখরুলের পকেট বড় গরম। এখন টাকা দিয়ে দিয়ে ক্যাডার পালছে। এই নাশকতার সমুচিত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। বাড়াবাড়ি করবেন না, খবর আছে৷’

ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমত উল্লাহ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। উপকমিটির সদস্যসচিব এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবদুল হালিম, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বক্তব্য দেন।