প্রথম আলো: আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি নির্বাচনে নেই। আপনি কি স্বস্তি বোধ করছেন? মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কাকে দেখছেন?
আজমত উল্লা: মেয়র পদে বিএনপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। কিন্তু কাউন্সিলর পদে তাদের অনেক প্রার্থী আছে। বিএনপি মেয়র পদ বর্জন করলেও নির্বাচনে আছে। নির্বাচন নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সব প্রার্থীর প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। তাঁদের সবাইকে আমি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছি। আলাদা করে কাউকে বিশেষ প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছি না।
প্রথম আলো: নির্বাচনী প্রচারণায় অন্য সব প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ করেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন (ইসি) সেসব অভিযোগ আমলে নেয়নি বলা হচ্ছে। এসব অভিযোগের বেশ কিছু আপনার বিরুদ্ধেও রয়েছে। আপনি কি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন?
আজমত উল্লা: ইসি তো আমার বিষয়ে বেশি কড়াকড়ি করেছে। আমাকে তলব করেছে, ১২-১৪টি মিছিলে জরিমানা করেছে। আমার পার্টি অফিসের ব্যানার নিয়ে পর্যন্ত ইসি আপত্তি জানিয়েছে। তাই এসব অভিযোগ আসলে করার জন্য করা।
প্রথম আলো: আপনার নিজের এলাকা টঙ্গীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের প্রচারণায় একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্য প্রার্থীর প্রচারণায় বাধা দেওয়া যৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক মনে করেন কি না?
আজমত উল্লা: কারও প্রচারে বাধা দেওয়াকেই আমি গণতান্ত্রিক ও যৌক্তিক মনে করি না। কিন্তু এর পেছনে নাটক আছে। ওনার ছেলে নাটকে বড় ওস্তাদ। তিন বছর তিনি মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। মানুষের ওপর ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়েছেন। এখন বলছেন, নির্বাচিত হলে আগামী পাঁচ বছরের জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স মাফ করে দেবেন। এগুলো তো স্টান্টবাজি।
প্রথম আলো: প্রথমবারের মতো গাজীপুরে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে। ইভিএম নিয়ে অন্য প্রার্থীদের বিরোধিতা রয়েছে। এই বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
আজমত উল্লা: নির্বাচন কী প্রক্রিয়ায় হবে, সেটা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। তবে ইভিএম নিয়ে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি রয়েছে। আবার তরুণদের মধ্যে এটি নিয়ে আগ্রহও রয়েছে। ইসি প্রার্থীদের সময় কম দিয়েছে। জনগণকে সচেতন করার সময় কম পাওয়া গেছে।
প্রথম আলো: ভোটের পরিস্থিতিতে কে জয়লাভ করবে বলে মনে করছেন? ভোটের ফলাফল যা-ই হোক, মেনে নেবেন কি না?
আজমত উল্লা: জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। জনগণ যে রায় দেবে, তা মাথা পেতে নেব। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ অনেক। প্রচারে যেখানে গিয়েছি, হাজারো মানুষ স্বাগত জানিয়েছে।
প্রথম আলো: নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বিভিন্ন দূতাবাসে চিঠি দিয়েছেন।
আজমত উল্লা: নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একজন প্রার্থী দূতাবাসসহ বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দিয়েছেন। নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি ইসিতে, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যেতে পারেন। বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দেওয়ার উদ্দেশ্য ভালো নয়।
প্রথম আলো: গত কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম দেখা গেছে। গাজীপুরের ভোট নিয়েও ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে।
আজমত উল্লা: মানুষ দুর্নীতিমুক্ত গাজীপুর দেখতে চায়। কোনো অপপ্রচার, মিথ্যা, অপবাদ কাজে লাগবে না। মানুষের আমার প্রতি বিশ্বাস আছে। ১৮ বছর টঙ্গীর মেয়র ছিলাম। কোনো মিথ্যা আশ্বাস দিইনি, দুর্নীতির একটা অভিযোগ কেউ করতে পারেনি। জনগণ এগুলো দেখেছে।