কামাল মজুমদারের অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাত গুণ, ২১ মামলা থেকে অব্যাহতি

কামাল আহমেদ মজুমদারফাইল ছবি

১৫ বছর ধরে ঢাকা–১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার। এ সময়ে তাঁর নামে থাকা ২১টি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি। গত ১৫ বছরে তাঁর অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে সাত গুণের বেশি। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারে শিল্প প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা কামাল আহমেদের বার্ষিক আয় এই দেড় দশকে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় কামাল আহমেদ মজুমদার আয় ও সম্পদের বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। এটার সঙ্গে নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর দেওয়া হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। এবারও ঢাকা–১৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামাল আহমেদ মজুমদার।

হলফনামায় কামাল আহমেদ মজুমদারের পেশা উল্লেখ করা হয়েছে ‘ব্যবসা, কৃষি, মৎস্য ও খামার’। শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামায় বার্ষিক আয় ৫৯ লাখ টাকার কিছু বেশি দেখিয়েছিলেন কামাল আহমেদ মজুমদার। এবার তিনি আয় দেখিয়েছেন ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি।

২০০৮ সালের হলফনামায় নিজের নামে ২২টি মামলার কথা উল্লেখ করেন কামাল আহমেদ মজুমদার। এর সবগুলো সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। এবার হলফনামায় ২১টি মামলার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সবগুলোতে তিনি খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় জানিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, হত্যাচেষ্টা, জরুরি বিধিমালা (দুর্নীতি দমন) ও আয়কর অধ্যাদেশের মামলা ছিল।

অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাত গুণ  

বর্তমানে কামাল আহমেদ মজুমদারের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ১০ কোটি ১৫ লাখ টাকা সমমূল্যের। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ছিল ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা সমমূল্যের। এ সময়ে নগদ অর্থ খুব বেশি বাড়েনি। বন্ড, ঋণপত্র ও স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগ বেড়েছে। বর্তমানে এই খাতে ২ কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগ রয়েছে কামাল আহমেদের।

এবারের হলফনামায় বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেলের আর্থিক মূল্য ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার বেশি দেখানো হয়েছে। ১৫ বছর আগে এ খাতের সম্পদ ছিল ১৯ লাখ ৫০ হাজার টাকার। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণ দেখানো হলেও এবার তা দেখানো হয়নি। কেবল তাঁর নিজের নামে ২০ হাজার টাকার সমপরিমাণ স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতুর তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘অন্যান্য পিস্তল, শটগানসহ’ আলাদা একটা ক্যাটাগরিতে সর্বমোট ৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার হিসাব দেখানো হয়েছে।

তিনটি বাড়ি দেখানো হয়নি

নবম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় কামাল আহমেদ মজুমদার তাঁর কৃষিজমির পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৬ হাজার ১৬১ দশমিক ২৩ শতক। এর আর্থিক মূল্য দেখানো হয়েছিল ২৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬৬০ টাকা। ১৫ বছর পরের হলফনামায় কৃষিজমির পরিমাণ ও অর্থমূল্য একই দেখানো হয়েছে।

২০০৮ সালের হলফনামায় ২৪৪ দশমিক ৯০ শতক অকৃষিজমি দেখানো হলেও এবার তা দেখানো হয়নি। আগের হলফনামায় ২ কোটি ২০ লাখ ১৪ হাজার ৫১৮ টাকা মূল্যের দুটি বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টের হিসাব দেওয়া হয়েছিল। এবারের হলফনামায় সেই দুই বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য ৪৫ লাখ টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। তবে ২০০৮ সালে তিনটি দালান ও আবাসিক ভবন দেখানো হয়েছিল, এবার তা দেখানো হয়নি।