বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা ৩৩ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে সরকারি, বেসরকারিসহ বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি ৩৩ হাজার ১০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাবে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদের এক প্রশ্নের জবাবে পিডিবির কাছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া পাওনার তথ্য তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারি, বেসরকারি ও যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানির পাশাপাশি আমদানির মাধ্যমে বিদ্যুৎ ক্রয় করে তা বিতরণ সংস্থা/কোম্পানির কাছে বিক্রি করে পিডিবি। পিডিবির কাছে সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সঞ্চালন কোম্পানিগুলোর পাওনা গত এপ্রিল পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৯১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর পাওনা ১৫ হাজার ২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। যৌথ উদ্যোগে স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর পাওনা ২ হাজার ৪১৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আদানিসহ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি বাবদ পিডিবির কাছে বিভিন্ন কোম্পানির পাওনা ৫ হাজার ২৯৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলোর দায় (ব্যাংকের কাছে) ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা সরকার সম্প্রতি বন্ডের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ নাহিদের এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি না থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে পরিপূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে কিছু কিছু স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হকের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহে বিদ্যুতের কিছু সমস্যা হচ্ছে। সেখানে গ্যাসের স্বল্পতার কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। জামালপুরের দুটো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ আছে।

সংসদ সদস্য আহমদ হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, গভীর সমুদ্রে খনিজ সম্পদ আহরণে ইতিমধ্যে টেন্ডার (দরপত্র) আহ্বান করা হয়েছে। এক্সনমবিল, শেভরনসহ ১৭টি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ফরিদা ইয়াসমীনের প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন গ্যাসের ঘাটতি ৫০ কোটি ঘনফুট। তবে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গ্যাস পায় না, এমন কোনো লিখিত অভিযোগ তাঁরা পাননি। সরকার চেষ্টা করছে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস রাখার জন্য। বাসাবাড়িতে গ্যাসের সমস্যা আছে। গ্যাসের চাপের সমস্যা আছে।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদের এক প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) অধীনে চালু থাকা ৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টি লোকসান দিচ্ছে। সেগুলো হলো এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ ব্লেড ফ্যাক্টরি লিমিটেড, ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড ও ন্যাশনাল টিউবস লিমিটেড।

শিল্পমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টি লোকসানি। ২০১৮ সালের পর থেকে সরকার এ খাতে কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না বলেও জানান তিনি।