বিএনপিকে ভুলের খেসারত অনেক দিন দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেনছবি: বাসস

বিএনপি নির্বাচনে না এসে যে ভুল করেছে, তার খেসারত দলটিকে অনেক দিন দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র যোজন যোজন দূরের ব্যবধান। দুনিয়ার কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক নেই। কিন্তু পাকিস্তান তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক ধরে রেখেছে। দুই দেশের মধ্যে পার্থক্যটা হলো—বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি শক্তি, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব মাতামাতি করে। ভিসানীতি আনে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এ নিয়ে কোনো মাতামাতি নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে সহিংসতা, ভোট কারচুপি, জালিয়াতি, ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। দেশটির বেলুচিস্তানে বোমা বিস্ফোরণে কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের ট্রু ফরম (সত্যিকারের ধরন) অনুসরণ করি। নির্বাচনে বিরোধী দল আসেনি, কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আমরা বলছি না, আমাদের গণতন্ত্র শতভাগ পারফেক্ট (নিখুঁত)। গণতন্ত্রের ছবক দেয় যে পশ্চিমা বিশ্ব, তারাও পারফেক্ট নয়।’

আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা হবে। এ প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দলে সুদৃঢ় ঐক্য দরকার। গত নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কৌশলগত কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করেছেন। নির্বাচনে ৬২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরাও কিন্তু আওয়ামী লীগের। অনেকে আওয়ামী লীগের পদধারীও।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে কিছুটা ভুল–বোঝাবুঝি, মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব, সংঘাতের মতো দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে। এসব বিষয়ের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে দলে সুদৃঢ় ঐক্য দরকার।

সেতুমন্ত্রী বলেন, উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঘিরে যেন কোনো মনোমালিন্য, কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়, সে জন্য দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আবহ তৈরির জন্য এই বিশেষ বর্ধিত সভার আয়োজন।

রাজনীতির মাঠে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি যতটুকু জানেন, অনেক মামলায় তাঁর (মির্জা ফখরুল) জামিন হয়েছে। একটি মামলা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় তাঁর ক্ষেত্রে একটু অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। হয়তো একসময় জামিন হয়ে যাবে। একজন বিনা বিচারে আটকে থাকবেন, এটা সরকারও চায় না।

জামিন হয়নি, ভবিষ্যতে হবে না—এটা ঠিক নয়। এখন বিএনপির নেতাদের বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। একেকজন একেক কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বিএনপির মুখপাত্র। তিনি বললে সেটা দলের বক্তব্য।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আবেদনটা করুক। স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় কীভাবে সুপারিশ করে তারপর বলা যাবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম ও সুজিত রায় নন্দী, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।