আওয়ামী লীগের পেটোয়া বাহিনীর বিচার হবে: খন্দকার মোশাররফ হোসেন
আওয়ামী লীগের যেসব পেটোয়া বাহিনী বিএনপির নেতা–কর্মীদের হামলা করেছে, তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, বেশি দিন সময় নেই, তাদের বিচার হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্যপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি ও দলের তিন কর্মী হত্যার প্রতিবাদ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি রাজধানীতে টানা সমাবেশ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আজকের এই সমাবেশ।
আওয়ামী লীগ নেতাদের হুঁশিয়ার করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যেসব পেটোয়া বাহিনী বিএনপির নেতা–কর্মীদের হামলা করেছে, তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করা হচ্ছে। আপনারা জনগণের কাছেও চিহ্নিত হচ্ছেন। আমরা জনগণের দাবি নিয়ে কথা বলছি, আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন। বেশি দিন সময় নেই, আপনাদের বিচার হবে।’
আজ দুপুরে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের সড়কে বিএনপির নেতা–কর্মীরা জড়ো হয়। বেলা দুইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কিংবা রিজার্ভ কমে যাওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি দায়ী। পৃথিবীর মধ্যে নজিরবিহীনভাবে একলাফে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আজ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তারা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না। এর জন্য দায়ী হলো, এই সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছে সরকার। এই দুর্নীতির জন্য রিজার্ভ কমে গেছে। ডলার–সংকট। আমদানি রপ্তানি কমে গেছে। এ দেশে ব্যাংক লুট করেছে, শেয়ারবাজার লুট করেছে। রিজার্ভ লুট করেছে। বিদেশে তাদের টাকা-পয়সার হিসাব নাই।’
পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে আপনারা নিজেদের শপথ ভঙ্গ করছেন। অনেক হয়েছে, আর নয়। আর আমাদের একজন নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করবেন না। আওয়ামী লীগ বলে, বিএনপি নাকি খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে আমরা যখন সমাবেশ করি, তখন কেন ভয়ে ভীত হয়ে যান? কেন আপনাদের গুন্ডা বাহিনী দিয়ে, পুলিশ বাহিনী দিয়ে আমাদের নেতা–কর্মীদের বাধা দেন?’
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘এই সরকার বিএনপির ৩৫ লাখ নেতা–কর্মীর বিরুদ্ধে এক লাখ মামলা দিয়েছে। আমরা কিন্তু জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। মানুষ কী চায়? মানুষ পাঁচ বছরের মাথায় ব্যালট বক্সে গিয়ে একটি ভোট দিতে চায়। আর কিছু তারা চায় না। কিন্তু সেই ভোট তারা (আওয়ামী লীগ) চুরি করেছিল। আগের রাতে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেছে। একটি ভুয়া সংসদ তৈরি করেছে। এই সংসদ বাতিল করতে হবে। এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবর্তন করতে হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা নবীউল্লাহ নবী, সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, শামসুর রহমান ওরফে শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।