বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি করার ক্ষমতা নিষিদ্ধ করতে হবে: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীফাইল ছবি

যেকোনো বিক্ষোভ ও আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে গুলি করার ক্ষমতা ‘চিরতরে নিষিদ্ধ’ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, এ দেশে যেন কোনো বিক্ষোভ, কোনো আন্দোলন দমানো অথবা যেকোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি দমনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শটগান বের করে গুলি করে হত্যার যে দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী রেখেছে, তা চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। এখন থেকে কোনো বর্বর শাসকের কোনো বর্বর আইন প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না।

মুন্সিগঞ্জের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে আজ সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ওই পরিবেশ থেকে এমন একটি পরিবেশে উত্তরণ ঘটাতে হবে, এমন সংস্কার করতে হবে, যাতে কোনো সরকারই যেন রক্তচক্ষু দেখিয়ে জনগণকে দমন করতে না পারে। আমাদের স্বাধীন চিন্তা, স্বাধীন মতামত প্রকাশে কেউ যেন বাধা হয়ে দাঁড়াতে না পারে। আমরা সেই পরিবেশ চাই।’

‘আ.লীগের হরতাল-অবরোধ অনলাইনে’

ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছেন’ বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আবার শেখ হাসিনা তাঁর বর্বর শাসন ফিরে পাওয়ার জন্য মরিয়া। তিনি পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় পাচ্ছেন, আশ্রয় পেয়ে তিনি বাংলাদেশের ভেতর নানা ধরনের উসকানিমূলক কাজ ও চক্রান্ত করার জন্য তাঁর নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু জনগণের সাড়া না পেয়ে এখন তাঁরা অনলাইনে হরতাল-অবরোধ করছেন। জনগণের মধ্যে তাঁরা যেতে পারছেন না।

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘কোথায় ওনার রক্ষাবাহিনী, কোথায় তাঁর যুবলীগ-ছাত্রলীগ, কোথায় তাঁর র‌্যাব-পুলিশ—যাঁদের দিয়ে নির্বিচারে গণতান্ত্রিক শক্তির রক্ত ঝরিয়েছেন, লাশ করেছেন মাসুম বাচ্চাদের।’

মুন্সিগঞ্জের নবগঠিত বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের নিয়ে আজ সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী
ছবি: সংগৃহীত

সংস্কারের জন্য নির্বাচন আটকে রাখার কোনো অর্থ হয় না, এ মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী দ্রুত আগামী জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময়সীমা দিতে হবে। আমরা ১৬-১৭ বছর যেটা থেকে বঞ্চিত হয়েছি, জনগণ বঞ্চিত হয়েছে, সেই বঞ্চনার দুঃস্বপ্ন যাতে দূর হয়, সে জন্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটা তারিখ অবশ্যই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দিতে হবে।’

বিএনপি সংস্কারের বিরুদ্ধে নয় জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমরা সংস্কার কী কী হওয়া উচিত, সেটা বলেছি। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া, এটা যুগ যুগ ধরে চলবে। জনগণের যে দাবি, সে দাবির ওপর ভিত্তি করেই সংস্কার হবে।’

এর আগে রুহুল কবির রিজভী নবগঠিত মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সিনহা ও সদস্যসচিব মহিউদ্দিন আহমেদসহ নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।