ছাত্রলীগ সভাপতি বললেন ভালোবাসা থেকেই সেই রিয়াদ কর্মসূচিতে থাকছেন

ছা্ত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খানের সঙ্গে এস এম রিয়াদ হাসান
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকা ও অনিয়মের জন্য সমালোচিত হয়েও হলে থেকে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা এস এম রিয়াদ হাসান। দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের ঘনিষ্ঠ এই নেতা৷

রিয়াদকে নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই গত শুক্রবার রাতে ছাত্রলীগ সভাপতির ঘনিষ্ঠ আরও একজন চাকরিজীবীকে সংগঠনের সহসভাপতি পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আমানুল্লাহ আমান ওরফে সাগর নামের ওই ব্যক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে কর্মরত বলে জানা গেছে।

গতকাল শনিবার প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় ‘ছাত্রলীগ সভাপতির আনুকূল্যে বড় পদ, চাকরি বাগিয়েছেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আরও পড়ুন

এর আগে শুক্রবার দুপুরে প্রথম আলো অনলাইনে ‘ছাত্রলীগ সভাপতির আনুকূল্যে বড় পদ বাগিয়েছেন, রেফ্রিজারেটর নিয়ে অবৈধভাবে হলে থাকছেন’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুই প্রতিবেদনে বলা হয়, আল নাহিয়ান খানের আনুকূল্যে তিনি ছাত্রলীগের ‘বড়’ নেতা হয়েছেন।

এই পরিচয় ও প্রভাব ব্যবহার করে তিনি অবৈধভাবে হলে থাকেন। তাঁর কক্ষে আছে রেফ্রিজারেটর, এয়ারকুলার। সম্প্রতি তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সরকারি চাকরিজীবীদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কোনো সুযোগ না থাকলেও তিনি এখনো দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত থাকছেন।

প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর একই বিষয়ে আরও কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে সমালোচনার মুখে পড়লেও এস এম রিয়াদ হাসান একই কাজ অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবারও গাজীপুরে ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে এক ছাত্রসমাবেশে অংশ নিয়েছেন তিনি।

এ ছাড়া গতকাল মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের মেয়ের আকিকার অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে অংশ নিয়েছেন রিয়াদ। তিনি এখনো অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছেন। গতকালও তাঁর দখলে থাকা জহুরুল হক হলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে ফ্রিজ ও এয়ারকুলার ছিল।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেছেন, সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ায় রিয়াদের পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শূন্য হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের একজন সাবেক হিসেবে ছুটির দিনে (শুক্রবার ও শনিবার সরকারি ছুটি ছিল) সংগঠনের প্রতি ভালোবাসার জায়গা থেকে রিয়াদ বিভিন্ন কর্মসূচিতে থাকছেন।’

আরও এক চাকরিজীবীকে পদ দেওয়ার অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে কর্মরত আমানুল্লাহ আমান ওরফে সাগর নামের এক ব্যক্তিকে ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ফেসবুকে আমানুল্লাহ আমানের সহসভাপতি মনোনীত হওয়ার চিঠির ছবি পোস্ট করে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ছাত্রলীগের একটি অংশ বলছে, ছাত্রলীগ সভাপতিকে মোটরসাইকেলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়াসহ ব্যক্তিগত কাজ করে দিয়ে তিনি এই পদ পেয়েছেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলছেন, আমানুল্লাহ আমানকে সহসভাপতি মনোনীত করার চিঠিটি ভুয়া। যদিও ওই চাকরিজীবী গতকাল ও গত শনিবার ছাত্রলীগ সভাপতির সঙ্গে মৌলভীবাজার ও গাজীপুর গিয়েছিলেন।

গতকাল আমানুল্লাহ আমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠানো হয়। তিনি প্রশ্নটি দেখলেও কোনো জবাব দেননি।