গুজবে কান না দিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান কমিশনের

ডাকসু রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের সামনে ব্রিফ করছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। সিনেট ভবন, ৭ সেপ্টেম্বরছবি: দীপু মালাকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে কোনো ধরনের গুজবে কান না দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভোটকেন্দ্রে আসার আহ্বান জানিয়েছেন এই নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

আজ রোববার বিকেলে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের সামনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক জসীম উদ্দিন এ আহ্বান জানান। ব্রিফিংয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, কাজী মারুফুল ইসলাম, এস এম শামীম রেজা, সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীরও কথা বলেন।

প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, ‘গুজব একটি সামাজিক ব্যাধি। কোনো ঘটনা ঘটেনি, কিন্তু চারদিকে গুজব ছড়িয়ে যাচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের গুজব হতে পারে—অমুক প্রার্থী চলে গেছে, অমুক প্রার্থী আরেকজনকে সমর্থন করছে। তাই ছাত্রছাত্রীদের নির্বাচনকে ঘিরে কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কোনো গুজব ছড়ালে সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইটে খোঁজ রাখবেন। সঠিক তথ্য জানতে চাইলে আমাদের কাছে আসবেন। কোনো গুজবে কান দেবেন না।’

‘নকল পরিচয়পত্র বানানো হচ্ছে’

নকল পরিচয়পত্র বানানো হচ্ছে জানিয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে ভোটের লাইনে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে আমাদের কাছে সংবাদ আসছে। তাদেরকে প্রতিহত করতে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোটকেন্দ্রে ঢোকানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদি কেউ ধরা পড়ে, তাকে সরাসরি পুলিশে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তবে বৈধ ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দিতে পারবেন।’

ভোটকেন্দ্রে বুথ সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক জসীম উদ্দিন বলেন, বুথ সংখ্যা নিয়ে নির্বাচনের বিভিন্ন অংশীজনের মধ্যে শঙ্কা ছিল। আগে ৮ কেন্দ্রে ৭১০ বুথ ছিল। পরে সেটি বাড়িয়ে ৮১০ করা হয়েছে, যাতে আবাসিক–অনাবাসিক ভোটারদের কোনোভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বিরক্ত হতে না হয়।

রাজনৈতিক নেতাদের মাধ্যমে ভোট চাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ছাত্রছাত্রীদের কোনো তথ্য কাউকে সরবরাহ করিনি। আমরা এমন অভিযোগ আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দপ্তরে খোঁজ নিয়েছি। ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাভিত্তিক গ্রুপ, বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত থাকে। সেখান থেকে ফোন নম্বর আদান–প্রদান হয়ে থাকতে পারে। এর সঙ্গে কমিশনের কোনো সম্পর্ক নেই।’

‘ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট’

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে উল্লেখ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর বলেন, ‘যেসব শিক্ষার্থীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং যাঁরা ব্রেইল পড়তে পারেন, তাঁদের জন্য প্রথমবারের মতো আমরা ব্রেইল পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ছাপিয়েছি।’

আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘প্রচার শুরুর পর থেকে আজ পর্যন্ত আমরা যতগুলো আচরণবিধি–সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি, সব কটির বিষয়েই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এর মধ্যে কোনোটিতে মৌখিক, কোনোটিতে মুঠোফোনে সতর্ক করেছি। আবার কোনোটি লিখিত আকারে সতর্ক করেছি। পাশাপাশি দুটি ঘটনায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’