নির্বাচনের আগে দুই কাজ নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, ১০ নভেম্বর
ছবি: দীপু মালাকার

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের আগে দুটি কাজ নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে একটি কাজ হলো, নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া। আর আরেকটি কাজ হলো,  বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে চোরাগোপ্তা হামলা মোকাবিলা এবং নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখা।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনের যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিকূল পরিস্থিতি চলছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা দলের কার্যক্রমকে জোরদার করতে সহায়ক হবে।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম। নির্বাচন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হলে আমাদের হাতে সময় একেবারেই কম।’

আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দেশে বিভিন্নভাবে সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে বলেন তিনি। ২৮ তারিখে বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘স্বাভাবিক আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর তারা অস্বাভাবিক পথে যাচ্ছে। তাদের পুরোনো চোরাগোপ্তা হামলা, গাড়ি পোড়ানো, আগুন সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি করছে। তারা সরকার তথা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হটানোর জন্য হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরাসরি পারছে না, তাই চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে।’

সামনে কঠিন পথ অতিক্রম করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আপনাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, যেসব জায়গায় তারা হামলা চালায়, সেসব জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি জোরদার করতে হবে। প্রস্তুতি নিয়ে, জায়গা চিহ্নিত করে অবস্থান নিয়ে সতর্ক পাহারায় থাকতে হবে। সরকারি দলের অনাগ্রহ, আলস্য আমরা দেখিনি। আমরা লক্ষ্য করছি আদর্শের প্রশ্নে নেত্রীর প্রতি আনুগত্য, নেত্রীর নির্দেশে আদেশ পালনে প্রত্যেকে সক্রিয়।’

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘সামনে আরও কঠিন পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে। সেভাবে আপনাদের প্রস্তুত করুন। এটা শুধু নির্বাচনের জন্য নয়, এটা আদর্শের লড়াই।  উন্নয়ন আর অর্জনের জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। এই যুদ্ধ জয়ের প্রতিজ্ঞা নিয়েই নেমেছে আমাদের দলের নেতা–কর্মীরা। এই সংকট আস্তে আস্তে কেটে যাবে।’

পোশাকশ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে বিএনপির উসকানি আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইন্ধন তো আছেই। এখানে পরিষ্কারভাবে বিএনপি এবং তার দোসরদের কালো হাত বিস্তৃত হয়ে আছে। তারাই উসকানি দিচ্ছে, তারাই গুজব সৃষ্টি করছে’

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন,  ‘উসকানি আর গুজব সৃষ্টি করে তারা নিরীহ শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছে। কোথায় ছিল শ্রমিকদের বেতন ৮০০০ টাকা। আর সেই বেতন এখন ১২ হাজার ৫০০ টাকা। যেটা ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন দেশের অবস্থাও বুঝতে হবে। নেত্রী গতকাল পরিষ্কার করে সেটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে বিজিএমইএ–এর দুই–একজন নেতারাও ছিলেন। তাঁরা শুনেছেন। এ ব্যাপারে বেশির ভাগ সমাধান হয়ে গেছে।’

তবে কোনাবাড়ী ও আশুলিয়া, এই দুটি জায়গায় কিছু সমস্যা আছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমাদের শ্রমিকেরা বর্তমান বাস্তবতার বিষয়গুলো উপলব্ধি করে সমাধানে এগিয়ে আসবেন।’

পোশাকশ্রমিকদের পরিস্থিতি প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত মনিটর করছেন বলছে উল্লেখ করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে খুব একটা ষড়যন্ত্র করে, ওই ২৮ তারিখের মতো কিছু একটা করবে সে আশার গুড়ে বালি।’ শ্রমিকেরা কারও কথায় বিভ্রান্ত হয়ে নিজেরা নিজেদের ক্ষতি করবে না বলে তিনি আশা করেন।

যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক সামসুন্নাহার চাঁপা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।