ওবায়দুল কাদের বললেন, আদানির বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে বিএনপির অভিযোগ মনগড়া

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ফাইল ছবি

আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে বিএনপি মনগড়া অভিযোগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি প্রসঙ্গে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে মনগড়া ও বানোয়াট মন্তব্য করেছেন।

আমরা দেখি, ক্ষমতা দখলের জন্য কীভাবে বিএনপি নেতারা বিদেশি দূতাবাসগুলোতে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিদেশি প্রভুদের স্বার্থ রক্ষার মুচলেকা দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে, তারা কখনোই জনগণের কল্যাণ করতে পারে না।
ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘আদানির গ্রুপের সঙ্গে যেই চুক্তি করা হয়েছে, সেটা দেশবিরোধী। জনগণবিরোধী এই চুক্তি বাতিল করতে হবে।’

নিরবচ্ছিন্নভাবে জনগণের বিদ্যুৎ–সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার আদানির কাছ থেকে একটি লাভজনক চুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ভারতের একটি কোম্পানিকে দিয়ে দুই বিলিয়ন ডলার এককালীন বিনিয়োগ করিয়ে, দেশটির অভ্যন্তরে ৬০০ একর জমির ওপর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানিয়ে, ভারতের আকাশে কয়লা পুড়িয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে, তা সর্বনিম্ন দামে ক্রয় করে বাংলাদেশে আনা হবে এবং সেটা মানুষ ব্যবহার করবে।

বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ রক্ষা করেই আদানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বলে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে দেশের জনগণ লাভবান হয়েছে। যারা বিদ্যুতের বদলে জনগণকে খাম্বা দিয়েছে, বিদ্যুতের দাবি করায় জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের মুখে বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলা মানায় না।’

আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে, জনগণই দলটির শক্তির একমাত্র উৎস বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রক্ষমতার জন্য আওয়ামী লীগ কখনো জনগণ ব্যতীত অন্য কারও মুখাপেক্ষী হয়নি। যার জন্য দেশি-বিদেশি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অসংখ্যবার আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’

১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই থেকে অর্থ নিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকাও দলটি দিয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা দেখি, ক্ষমতা দখলের জন্য কীভাবে বিএনপি নেতারা বিদেশি দূতাবাসগুলোতে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিদেশি প্রভুদের স্বার্থ রক্ষার মুচলেকা দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসে, তারা কখনোই জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দুঃশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, দুর্বৃত্তায়নই তার জ্বলন্ত উদাহরণ।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুটি একটি ডেড ইস্যু বলে আবারও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তাঁর দাবি, গণতন্ত্রকামী প্রত্যেকটি মানুষ মাত্রই জানে, জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত নয় এমন ব্যক্তি দ্বারা এক মুহূর্তের জন্যও রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পূর্ণরূপে গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শের পরিপন্থী। তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে জনগণ ক্ষমতাহীন হয়ে পড়ে।’