নারী সংহতির সমাবেশে বক্তারা
গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পরেও সমাজ নারীর জন্য নিরাপত্তা তৈরি করতে পারেনি
নারীরা প্রবলভাবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের অংশীদার হয়েছিলেন, অথচ আন্দোলনের এক বছর পরেও এই সমাজ নারীর জন্য নিরাপত্তা তৈরি করতে পারেনি। বরং সমাজে নানাভাবে নারীবিদ্বেষী তৎপরতা বাড়ছে। অভ্যুত্থানের এক বছর পরেও নারীর প্রতি আচরণের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে নারী সংহতির সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। জুলাইয়ে নারীদের সাহসী উত্থান উদ্যাপনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল বলেন, ‘আমরা আজকে দেখছি, বাংলাদেশে নারীরা যেভাবে আন্দোলনের অংশীদার হয়েছিল, আন্দোলনের অংশীদার হওয়ার এক বছর পরও এই সমাজ নারীর জন্য নিরাপত্তা তৈরি করতে পারেনি। বরং আমরা দেখছি সমাজে নানাভাবে নারীবিদ্বেষী তৎপরতা বাড়ছে। জুলাইয়ে নারীদের বড় ভূমিকা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনো বিদ্বেষ চলছে সমাজের মধ্যে। কিন্তু একই সঙ্গে এটাও সত্য যে বাংলাদেশের নারীরা এই বিদ্বেষকে প্রতিহত করছে।’
সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান বলেন, ‘আমি আসলে খুব একটা বেশি অবাক বোধ করিনি আন্দোলনের পরে যে আস্তে আস্তে সামনে থেকে মেয়েরা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিল। সেই জায়গাটাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমি মেয়েদেরসহ সবাইকে এই কথাটাই বলব, আমাদের কোনো লড়াই যেমন আমরা ছাড়িনি, মেয়েদের আলাদা যে লড়াই, সেটি সব সময় উদ্যাপনে এবং বিদ্রোহে থাকতে হবে।’
সমাবেশে হিলস উইমেন ফেডারেশনের সংগঠক রুপসী চাকমা বলেন, ‘বহু আশা–আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, গত ১৫ বছরে স্বৈরশাসনকে উৎখাত করতে পারলে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে। পাহাড়ে মানুষ যেভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে, তা থেকে মুক্ত হতে পারব। কিন্তু আজকে এক বছরে দাঁড়িয়েও আমরা দেখছি, কোনো পরিবর্তন নেই।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন নারী সংহতির সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দ্র, সহসাধারণ সম্পাদক রেবেকা নীলা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কানিজ ফাতেমা, নারী সংহতির কেরানীগঞ্জ মান্দাইলের সংগঠক লিপি আক্তার, রাশিদা আক্তার প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সমাবেশ শেষে একটি মশালমিছিল শাহবাগ মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়।