বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এ দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে: চীনের রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেবল এ দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, চীন চায় সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো বাংলাদেশই দেখুক, যাতে বাংলাদেশ স্থিতিশীলতা রক্ষা ও উন্নয়ন করতে পারে।
চীনের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত। আজ রোববার সকালে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরাম।
এ অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আমার পূর্ণ আস্থা আছে, বাংলাদেশ ভবিষ্যতে ভালো করবে এবং চীন-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।’
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল ও মানুষের সমর্থনে সন্তোষ প্রকাশ করে ইয়াও ওয়েন বলেন, বাংলাদেশ-চায়না সম্পর্ক আরও গভীর হবে। এই দুই দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধন আরও দৃঢ় হবে, এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।
‘বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হবে’
বাংলাদেশ ও চীনের বন্ধুত্ব ভবিষ্যতে আরও গাঢ় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই দুই দেশ দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের অবিচল আস্থা নিয়ে আমরা সব সময়েই সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক ২০১৬ সালে উন্নীত হয় এবং ২০১৯ সালে গভীরতা পায়। চীন ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই নিজ মূল স্বার্থ ও উদ্যোগের বিষয়ে একে অপরকে সমর্থন করে আসছে।’
সব অবকাঠামো উন্নয়নে বাংলাদেশ সব সময় চীনের সহযোগিতা পেয়ে এসেছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি, বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের অংশীদারত্ব অব্যাহত থাকবে।’ ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশের যে রূপকল্প, তাতে চীন সব সময় পাশে থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
‘নিষেধাজ্ঞা দিলেও কার্যকর হবে না’
আজকের এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-চায়না সিল্ক রোড ফোরামের চেয়ারম্যান ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সেখানে পশ্চিমা বিশ্ব হচ্ছে পড়ন্ত শক্তি। চীন ও রাশিয়ার উত্থান হচ্ছে। এটাই বাস্তবতা। কাজেই পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের ওপর স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দিলেও তা কার্যকর হবে না।’
দিলীপ বড়ুয়া আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত। এ জন্য দেশের জনগণ উৎসাহিত।
মানবাধিকার লঙ্ঘন করলেও ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেয় না যুক্তরাষ্ট্র—এ কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি শাহ আলম বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির দ্বিচারিতা। চীন ও রাশিয়ার নেতৃত্বে যে ব্রিকস গঠিত হয়েছে, তার সদস্যসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, যা আশার বিষয় বলে মনে করেন তিনি।
বিশ্বে চীনের পুনরুত্থান ঘটছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, এককেন্দ্রিক বিশ্বের বদলে এখন বহুকেন্দ্রিক বিশ্ব জায়গা করে নিচ্ছে। চীন, ভারতসহ আরও অনেক শক্তির উত্থান ঘটবে বলেও মনে করেন তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ আহমেদ।