ভয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে: মির্জা ফখরুল

রাজধানীর দয়াগঞ্জের তিন রাস্তার মোড় থেকে গণমিছিল শুরুর আগে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিকেলে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ভয়ে এখন আওয়ামী লীগের নেতাদের মুখ শুকিয়ে গেছে। তাঁদের মুখে আগের মতো হাসি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘টেলিভিশনে দেখবেন, আর আগের মতো হাসি নেই। আবার যারা বিদেশে বাড়িঘর তৈরি করেছে, ওটাকে কেমন করে বাঁচাবে, তার চেষ্টা করছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর দয়াগঞ্জের তিন রাস্তার মোড়ে গণমিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে আজ রাজধানীতে গণমিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি। দয়াগঞ্জে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি এই গণমিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগ লুট করে বাংলাদেশকে শেষ করে দিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা দেশকে ফোকলা বানিয়ে দিয়েছে। কিছু নেই। আবার নতুন আরেক জায়গা বের করেছে—পেনশন স্কিম। মানুষের টাকা চুরি করার আরেকটি ফন্দি বের করেছে। সেই টাকা চুরি করে তারা নির্বাচন করতে চায়। মানুষ এবার তা হতে দেবে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়ে এখন মুখ শুকিয়ে গেছে। তারা বুঝে গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি করেছে এবং বলেছে, যারা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছে, যারা জনগণকে ভোট দিতে বাধা দেবে, তাদের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আমেরিকার মানুষেরা, তাদের বিভিন্ন সংস্থা, মানবাধিকার সংস্থা তাদের সরকারের প্রতিষ্ঠানকে বলতে শুরু করেছে যে বাংলাদেশের ওপর শুনানি হোক। তারা বলেছে, বাংলাদেশে এখন বিরোধী দলগুলোর ওপর অত্যাচার হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, হত্যা করা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকার বাধা প্রদান করছে। তাই এদের আবার নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হোক।’

আওয়ামী লীগ সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে, এমন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এক বছরে ২০ জন তাঁদের বুকের রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়েছেন। তঁদের রক্ত কি আমরা বৃথা যেতে দেব? তাঁদের মায়েদের কান্না, স্ত্রীর কান্না, সন্তানের কান্না কি আমরা বৃথা যেতে দেব?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বলছে, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? সংবিধান তো আপনারা নিজেরাই কাটাছেঁড়া করেছেন! সংশোধনীর কথা বলে তারা যে জোর করে ক্ষমতায় আছে, সেটাই তো অবৈধ। আজকে সারা দেশ কারাগারে পরিণত করা হয়েছে। মনে হয় এটা জেলখানা। আমাদের শত শত বন্ধুকে তারা কারাগারে আটক করেছে। আটক করে রেখেছে কেন, বলেন তো? আটক করে রাখে কখন? যখন ভয় পায়!’

রাজধানীর দয়াগঞ্জের তিন রাস্তার মোড়ে গণমিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিকেলে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

নিজের ঘর সামলান, ভারতকে গয়েশ্বর

সমাবেশে বক্তব্যে ভারত নিয়ে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিজের ঘর নিজেরা সামলান। পরের ঘরের মাতবরি কমিয়ে দেন।

যারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে থাকবে, তারা বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা মারামারি চাই না। তবে আওয়ামী লীগ মারামারি করতে চাইলে ছেড়ে দেওয়া হবে না।’ গ্রেপ্তার করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শেষে বিকেল চারটার দিকে গণমিছিল বের হয়। মিছিলটি খিলগাঁও চৌরাস্তায় (রেলগেট) গিয়ে শেষ হয়।