বিদেশি সংস্থার প্রতিবেদনে ইসি নিয়ে খারাপ কিছু বলা হয়নি: মো. আলমগীর

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীরফাইল ছবি প্রথম আলো

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়ে খারাপ কিছু বলা হয়েছে, এমনটা তাঁরা দেখেননি। তিনি বলেন, ইসি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করেছে। নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হয়েছে, তা রাজনৈতিক দলগুলো ও জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই ও আইআরআইয়ের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী নির্বাচন কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই ও আইআরআইয়ের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, তাঁরা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন দেখেছেন। তবে এখনো কমিশনে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। বর্তমান কমিশনের অধীনে আর জাতীয় নির্বাচন হবে না। পরবর্তী নির্বাচনের অনেক সময় আছে।

নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, তাঁরা ইসি সচিবালয়কে বলেছেন, সংস্থাগুলো ইসির ভালো দিক, দুর্বল দিক কী কী দেখেছে, তার সারসংক্ষেপ তৈরি করতে। এগুলো পর্যালোচনা করে তাঁরা পরবর্তী কমিশনের জন্য পরামর্শ রেখে যাবেন।

মো. আলমগীর বলেন, পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো প্রার্থী, দল, সরকার, ভোটকেন্দ্র—নানা বিষয়ে কথা বলেছে। তাঁরা ইসির সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখবেন। সরকার হয়তো তাঁদের বিষয়গুলো দেখবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিবেদনের এক জায়গায় বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে কারচুপি হয়েছে, যেখানে ইসি ব্যবস্থাও নিয়েছে। কমিশন অবহেলা করেছে, এমনটা তারা বলেনি। কমিশন প্রার্থিতা বাতিল করেছে, প্রশাসনে রদবদল করেছে, ব্যবস্থা নিয়েছে—এসব কথা বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন

আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার জন্য ভোটারের সমর্থনসূচক সই জমা দেওয়ার বিধান বাদ দেওয়া হলেও সংসদ নির্বাচনে এ বিধান বাদ দেওয়া হবে কি না, এখনো সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি। এটি নিয়ে এখনো কমিশনে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।

সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে নির্বাচনী এলাকার ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে এত দিন ২৫০ জন ভোটারের সই জমা দেওয়ার বিধান ছিল। এবার নির্বাচন কমিশন উপজেলার ক্ষেত্রে এ বিধান বাদ দিয়েছে।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। বিএনপিরও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা কম। এর ফলে এবারের নির্বাচন হবে মূলত আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগকে সুবিধা দিতে উপজেলায় ভোটারদের সমর্থনসূচক সই বাদ দেওয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, এ কারণে বাদ দেওয়া হয়নি। এই বিধান গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। যাঁরা সমর্থনসূচক সই দেন, তাঁরা অনেক সময় নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে আবার সই জাল করেন। এ কারণে এটি তুলে দেওয়া হয়েছে। গণতন্ত্র ও রাজনীতির জন্য যেটা সহায়ক, সেটা করতে হবে।

মো. আলমগীর বলেন, উপজেলার ক্ষেত্রে এই বিধান বাদ দেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল। অন্যদিকে সংসদ নির্বাচনে এটি বাদ দিতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে। এ জন্য সংসদে যেতে হবে। এটি নিয়ে এখনো তাঁদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি।

উপজেলায় জামানতের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, জামানতের টাকার পরিমাণ অনেক আগে নির্ধারণ করা ছিল। এটি বাড়ানো হয়েছে। সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আগামী সময়ে হয়তো বাড়ানো হবে।

মো. আলমগীর বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে প্রার্থীদের ব্যয় কমবে।