তারা এখন হিরো আলমকে জেতাতেও সাহস করে না: জোনায়েদ সাকি

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি
ছবি: প্রথম আলো

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থা এখন এমন হয়েছে যে তারা নির্বাচনে হিরো আলমকে জেতাতে সাহস করে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন হিরো আলম। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ নিজেদের এই জায়গায় এনেছে।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, হিরো আলম চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন। ওবায়দুল কাদেরের সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার সাহস নেই।

সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বিএনপিসহ বিরোধী জোটগুলোও একই কর্মসূচি পালন করছে। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পদযাত্রা পূর্ব সমাবেশে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী নির্বাচনে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবেন না। এর কারণ ব্যাখ্যা করে সাকি বলেন, আগামী নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেলের নির্বাচন করা হবে। উনারা (আওয়ামী লীগ) বিরোধী দল থেকে লোক বাগিয়ে আনবেন।  গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে কথা দেবেন, আমরা তোমাদের জিতিয়ে আনব। তারপর নির্বাচন হবে।’

বিরোধী দলের নেতাদের এই টোপ দেখিয়ে সরকার বলবে আমরা কথা দিলে রাখি। সে জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে কথা দিয়ে উকিল সাত্তারকে জিতিয়ে এনে নানাভাবে বিরোধী দলের নেতাদের ভাগানোর জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন জোনায়েদ সাকি।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অভিযোগ করেন, ‘সরকার সিরিয়াল কিলারের মতো সিরিয়াল্লি গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে।’ তিনি বলেন, তারা (সরকার) আরও দাম বাড়াবে এটারও ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছে, দাম সমন্বয় করবে। সমন্বয় মানে দাম কমাবে না। বাড়াবে। এই বাড়ানোর ফলে জণগণের ওপর দুর্ভোগ আরও নামবে।

সরকারের উদ্দেশে মান্না বলেন, ‘সমন্বয় করতে হলে গত ১৪ বছরে সমন্বয় করেনি কেন? কারণ, তখন তারা ধান্দায় ছিল।’ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে দাবি করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনার অধীন এই দেশে কোনো নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না। তাঁকে ক্ষমতা থেকে যেতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই সরকার অন্তর্বর্তীকালে একটা ভালো নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সরকার পতনের চূড়ান্ত লক্ষ্য নিয়ে শিগগিরই আন্দোলন শুরু হবে।’

সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারি দলের মন খারাপ। কারণ, বিরোধী দল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছে। তারা যতই হামলা–মামলা আক্রমণ করছে বিরোধীদের কর্মসূচিতে জনসমাগম ততই বাড়ছে।

আরও পড়ুন

গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম, গণ অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সমানে থেকে পদযাত্রা বের করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। পদযাত্রাটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

আরও পড়ুন