মেট্রোরেল ঢাকার লাইফলাইন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের: ছাত্রলীগ সভাপতি
ঢাকার বুকে মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ‘স্মার্ট যানবাহনের’ যুগে প্রবেশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, মেট্রোরেল যেমন ঢাকা শহরের লাইফলাইন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তেমনি বাংলাদেশের লাইফলাইন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে সাদ্দাম হোসেন এসব কথা বলেন। ‘স্বপ্নের মেট্রোরেল চালু করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে’ আজ ঢাবির মধুর ক্যানটিন থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। শোভাযাত্রা শেষে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ সমাবেশ করে।
সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকের দিন ও গতকালের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আজকের দিনে আমরা বৈদ্যুতিক যানবাহনের যুগে প্রবেশ করেছি। স্মার্ট ও ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যানবাহনের যুগে প্রবেশ করেছি।’
সাদ্দাম হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে শেখ হাসিনার পরবর্তী লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের পথে শুভসূচনা নিশ্চিত করেছেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ঢাকা পৃথিবীর সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলোর একটি। এখানে যানবাহনের গড় গতি অন্যান্য দেশের চেয়ে অনেক কম। শেখ হাসিনার উপহার মেট্রোরেলে সর্বাধুনিক ও সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ঢাকায় মেট্রোরেল পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে এক লাইনের মাধ্যমে ঘণ্টায় ৬০ হাজার, দিনে ৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা শহরে ৬টি মেট্রোরেল উপহার দেবেন। এই ৬টি মেট্রোরেলের মাধ্যমে দিনে ৫০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। যানজটের কারণে জিডিপির ক্ষতি হতো। এখন মেট্রোরেলের সুবাদে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও কর্মঘণ্টা বাড়বে। এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনা। তাঁকে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রেমিকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমিকার দূরত্ব ঘুচে গেছে। ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়, পাঠ্যসূচিগুলো যেন আধুনিক করা যায়, ক্যাম্পাসগুলো যেন স্মার্ট ক্যাম্পাস হয়, আগামী দিনে তা নিশ্চিত করতে তাঁর সংগঠন কাজ করবে।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান থাকবে, যেকোনো মূল্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ সমুন্নত রাখা, শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা-সংকটে পাশে থাকার দায়িত্ব আপনাদের পালন করতে হবে।
আমাদের যে পরিবর্তন হয়েছে, তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের নিরাপত্তার স্বার্থে সেই পরিবর্তনকে আমাদের টেকসই করতে হবে, নিরাপত্তা দিতে হবে।’
বিএনপি-জামায়াতকে হুঁশিয়ারি
সমাবেশ থেকে বিএনপি ও জামায়াতকে হুঁশিয়ার করে দেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিএনপি-জামায়াত আগামীকাল ঢাকায় গণমিছিল করার হুমকি দিয়েছে। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে তারা অনেক হম্বিতম্বি করেছিল। কিন্তু তাদের শেষ পর্যন্ত ঢাকা শহরের মূল প্রান্ত থেকে বিদায় নিয়ে গোলাপবাগে সমাবেশ করতে হয়েছিল।
গণতন্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যারা মানুষ হত্যা করেছে, রাজনীতির লাইসেন্স নিয়ে যারা দুর্নীতিবাজদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে, বাংলার মাটি থেকে তাদের মূলোৎপাটনের শপথ ছাত্রসমাজকে নিতে হবে। তাদের বিষদাঁত যেন ছাত্রসমাজ উপড়ে ফেলতে পারে, সেই শপথ নিতে হবে। নিজেদের ভবিষ্যৎকে নিরাপদ রাখতে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
শেখ ওয়ালী আসিফ বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধন অপশক্তির অন্তরে জ্বালা দেয়। সেই জ্বালায় আগামীকাল তারা ঢাকা শহরে নৈরাজ্যের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তারা নাকি ঢাকা শহরে গণমিছিল করবে! মিছিল করা সবার রাজনৈতিক অধিকার। কিন্তু গণমিছিলের নামে গণহয়রানির চেষ্টা হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঢাকা শহরের কোনো প্রান্তে একটি রিকশা, গাড়ি বা সরকারি স্থাপনায় কেউ হাত দেওয়ার চেষ্টা করলে আমি বাংলাদেশের সুনাগরিক হিসেবে তা শক্ত হাতে প্রতিহত করার নির্দেশনা দিচ্ছি। যে হাত আগামীকাল কোনো বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করবে, ঢাকা শহরের মানুষ সেই হাত ভেঙে ফেলবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সজল কুণ্ডু, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ।