ক্যানসার হাসপাতাল দুর্নীতির ক্যানসারে আক্রান্ত: জামায়াত নেতা খালিদুজ্জামান
জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছেন ঢাকা–১৭ আসন এলাকার জামায়াতের একদল নেতা–কর্মী।
আজ সোমবার দুপুরে মহাখালীর জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের সামনে এই মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন জামায়াত নেতা এস এম খালিদুজ্জামান।
খালিদুজ্জামান বলেন, সাতটি রেডিওথেরাপি মেশিন থাকলেও মাত্র দুটি চালু আছে, বাকি পাঁচটি অচল। ফলে হাজারো রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাসপাতাল নিজেই দুর্নীতির ক্যানসারে আক্রান্ত উল্লেখ করে খালিদুজ্জামান বলেন, ‘সারা দেশের ক্যানসার রোগীরা ভরসা নিয়ে এখানে আসেন। অথচ হাসপাতাল নিজেই দুর্নীতির ক্যানসারে আক্রান্ত। এখানে চিকিৎসা পেতে রোগীদের মাসের পর মাস সিরিয়ালে থাকতে হয়। আবার দালাল চক্র টাকা নিয়ে বাইরের লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসা পাইয়ে দেয়।’
হাসপাতালের প্রশাসন দুর্নীতির মাধ্যমে পদোন্নতি ও নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে টেকনোলজিস্ট—সবার ক্ষেত্রেই অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই নেতা।
জামায়াত নেতা আরও বলেন, এই হাসপাতালে যারা রক্ষক হওয়ার কথা, তারাই ভক্ষক হয়ে উঠেছে। দুর্নীতির কারণে প্রকৃত রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। শ্রমিক, কৃষক, পোশাককর্মীদের মতো সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলে স্বাস্থ্য খাত থেকে দুর্নীতি দূর করা ও দালাল চক্র ভেঙে দেওয়ার আশ্বাস দেন খালিদুজ্জামান।
এদিকে মানববন্ধনে তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে আজ রাতে জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে সারা দেশ থেকে প্রতিদিন এক হাজার রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালে আসা রোগীদের ভর্তির জন্য ১০ থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়।
সাতটি রেডিওথেরাপি মেশিনের মধ্যে পাঁচটি নষ্ট, এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির বলেন, দুটি মেশিন সচল আছে। বাকি পাঁচটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। আবার মেশিন কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
নিয়োগ–বাণিজ্যে অনিয়ম রয়েছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিয়োগ–বাণিজ্য করার সুযোগ নেই। টেকনোলজিস্ট ও নার্স–চিকিৎসকদের নিয়োগ ও পদোন্নতি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আর আউটসোর্সিংয়ে কিছু কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে তাঁদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। তবে তাঁদের নিয়োগও সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়ে থাকে।