আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আছে। প্রথম আলোর উদ্যোগে করা এক জরিপে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বলেছেন, তাঁরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন।
আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে, এ বিষয়ে আশাবাদী উত্তরদাতাদের অর্ধেক (৫০%)। বিপরীতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন উত্তরদাতাদের এক–তৃতীয়াংশ।
প্রথম আলোর উদ্যোগে করা ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’-এ এই মতামত উঠে এসেছে। প্রথম আলোর জন্য জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড।
জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, ‘বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে, এ নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?’ এই প্রশ্নের জবাবে পাঁচটি বিকল্পের একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল। বিকল্পগুলো হলো ১. খুবই হতাশ। ২. হতাশ। ৩. হতাশও নই, আশাবাদীও নই। ৪. কিছুটা আশা আছে। ৫. অত্যন্ত আশাবাদী।
জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কিছুটা আশা আছে। আর ৮ দশমিক ১ শতাংশ এ বিষয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। অর্থাৎ ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আশাবাদী। বিপরীতে প্রায় ২৬ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা এ বিষয়ে হতাশ; আর ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছেন, খুবই হতাশ। অর্থাৎ উত্তরদাতাদের ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় আছে। বাকি ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার বিষয়ে হতাশও নন, আবার আশাবাদীও নন।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আশাবাদী হওয়ার ক্ষেত্রে বয়স ও লিঙ্গভেদে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি।
মানুষ ভোট দিতে আগ্রহী
জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, ‘আপনি কি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে যাবেন?’ এর জবাবে ‘হ্যাঁ’ বলেছেন ৯১ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। ভোট দিতে যাবেন না বলে উল্লেখ করেছেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ। আর ৬ দশমিক ৬ শতাংশ বলেছেন, তাঁরা ভোট দিতে যাবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নন।
ভোট দিতে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহের ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ এবং বয়সভেদে তেমন একটা পার্থক্য দেখা যায়নি।
জরিপে দেশের ৫টি নগর এবং ৫টি গ্রাম বা আধা শহর অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৫৫ বছর) ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটি একটি মতামত জরিপ। এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার (কনফিডেন্স লেভেল) মাত্রা ৯৯ শতাংশ।