আঙুলের চাপে ইভিএম বিকল, পরে দীর্ঘ লাইন

আঙুলের জোর চাপে এই ইভিএম বিকল হয়ে গেছে
ছবি: উত্তম মন্ডল

খুলনা সিটি করপোরেশনের একটি কেন্দ্রে সত্তরোর্ধ্ব এক নারী ভোটারের আঙুলের চাপে ইভিএম বিকল হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে ওই কেন্দ্রের একটি কক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। এতেই দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। পরে আরেকটি যন্ত্র বসিয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নগরীর শেখপাড়ায় পল্লীমঙ্গল শেখ হাতেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ঘটনা ঘটেছে।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ওই নারী ভোটার এত জোরে ইভিএমের ব্যালট প্যানেলে চাপ দিয়েছিলেন যে এটা নষ্ট হয়ে গেছে। পরে টেকনিশিয়ান এনে আরেকটি যন্ত্র বসানো হয়েছে।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আরও বলেন, ব্যালট প্যানেলের ১০টি সুইচের মধ্যে ১টিতে ওই নারী অনেক জোরে চাপ দিয়েছেন। পরে সুইচটি আর ওঠেনি। টেকনিশিয়ান পাশের কেন্দ্রে ছিলেন। যানবাহন বন্ধ থাকায় ওনার আসতে সময় লেগেছে। পরে আরেকটি বসানো হলে ওই কক্ষে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

কেন্দ্র সূত্র বলেছে, এই কেন্দ্রে পাঁচটি কক্ষে ছয়টি বুথ রয়েছে। এর মধ্যে চার নম্বর বুথে ইভিএম বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের প্রার্থীরা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কারণে অন্য ওয়ার্ডের চেয়ে এই ওয়ার্ডের চিত্র কিছুটা আলাদা। সকাল থেকে এই কেন্দ্রে ভোটারদের চাপ ছিল। এ জন্য একটি যন্ত্র বিকল হওয়ার ভোটারদের ভিড় বেড়ে যায়।

কেন্দ্রটি খুলনা সিটি করপোরেশন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। এই ওয়ার্ডে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাউন্সিল পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর আগে টানা তিন মেয়াদে এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। অবশ্য দলীয় নির্দেশ না মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া তাঁকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

আশফাকুর রহমান ছাড়াও এই ওয়ার্ডে মোট আটজন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কাউন্সিলর পদে এই ওয়ার্ডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী রয়েছেন। এ ছাড়া একজন নারী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

কেন্দ্রটিতে ভোটার ১ হাজার ৮৭৭ জন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে ভোট পড়েছে ৪৪৯টি। ৪ ঘণ্টায় ভোটের হার প্রায় ২৪।

দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, কেন্দ্রটির সামনে সড়কে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। কেন্দ্রে ঢোকার মূল ফটকে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। কক্ষগুলোর সামনেও সারিবদ্ধভাবে নারী ও পুরুষেরা ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। প্রতিটি কক্ষে আটজন কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টরা রয়েছেন। মেয়র প্রার্থীদের এজেন্টদেরও দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে কথা হয় বাইরে অপেক্ষমাণ আরেকজন নারীর সঙ্গে। তাঁরা বললেন, এই ওয়ার্ডের মানুষ সব সময় ভোট দেয়। এ জন্য অন্য ওয়ার্ডের চেয়ে এই এলাকার চিত্র আলাদা। নির্বাচন জমজমাট থাকে সব সময়।