মুক্তির একমাত্র পথ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন: ড. কামাল হোসেন

৮৭তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল গণফোরামছবি: সাজিদ হোসেন

দেশ কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র পথ হলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।

আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। তাঁর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণফোরাম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে ড. কামাল হোসেনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান।

২০ এপ্রিল ছিল ড. কামাল হোসেনের জন্মদিন। তিনি ১৯৩৭ সালের ওই দিনে বরিশালের শায়েস্তাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ৮৭তম জন্মবার্ষিকীর উৎসবের আয়োজন করা হয় আজ। নানা রঙের বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপরে ড. কামাল হোসেনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ইতিহাস থেকে আমরা যে শিক্ষা পাচ্ছি, যখনই আমরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে পেরেছি, কঠিন চ্যালেঞ্জ আমরা অতিক্রম করেছি। আসুন আজকে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিই, যাঁরা যাঁরা আজকে এখানে আছি, যাঁরা আজকে আসতে পারেননি এবং আসার ইচ্ছা ছিল—সবাই মিলে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দিই এবং মাঠে নামি।’

ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যের আগে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, বাসদের উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান, জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।

ড. কামাল হোসেনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদীদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য কর্তব্যবোধের জায়গা থেকে ড. কামাল হোসেন যা করেছেন, তা মানুষ স্মরণে রাখবে। শাসকশ্রেণির সঙ্গে থেকেও ড. কামাল হোসেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে ছিলেন।’

শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ‘১০ বছর ধরে ড. কামাল হোসেন সুস্থ রাজনীতির কথা বলে আসছেন। এখন দেশের রাজনীতি আরও বেশি রুগ্‌ণ হয়েছে। মানুষ বড় অসহায় হয়েছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নেই। মানসম্মান নিয়ে কথা বলতে পারছে না মানুষ।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মানুষ মনে করছে আমরা জিততে পারিনি। মানুষের এমন নিরাশার চরে বাসা বাঁধে স্বৈরাচার।’ আর বাসদের উপদেষ্টা খালেকুজ্জামান ড. কামাল হোসেনের শতায়ু কামনা করেন। সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংকটে–দুঃসময়ে ড. কামাল হোসেন তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন। ভরসা দিয়েছেন।

জন্মদিনের এই আয়োজনে গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম আলতাফ হোসেন সভাপতিত্ব করেন। আর সঞ্চালনায় ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। ড. কামাল হোসেনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেওয়ার পর জন্মদিন উপলক্ষে ১০ পাউন্ড ওজনের একটি কেক কাটা হয়। কেক কাটার সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা ‘শুভ শুভ শুভ দিন—ড. কামাল হোসেনের জন্মদিন’ বলে স্লোগানও দেন।