মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরছবি: ওবায়দুল কাদেরের ফেসবুক থেকে নেওয়া

মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যবর্তী নির্বাচন কোন দুঃখে? মামাবাড়ির আবদার!’

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলটি বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। প্রমাণ হয়েছে, শেখ হাসিনার হাতেই এ দেশের গণতন্ত্র নিরাপদ। শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। তাঁর হাতে যত দিন আছে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা মানুষের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে পারেন। যেটা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। বোঝে না বলেই তারা রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

‘ময়মনসিংহ-কুমিল্লায় সুষ্ঠু ভোট’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনসহ ২৩১টি স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে ভোট পড়েছে গড়ে ৬০ শতাংশ। নির্বাচন মোটামুটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ হয়েছে। সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করেনি। তিনি নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। বিজয়ীদের জানান অভিনন্দন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এসব নির্বাচনে অনেক জায়গায় বিএনপির নেতারা অংশ নিয়েছেন। কিছু নেতা জয়লাভও করেছেন। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ছিল না। এই নির্বাচনের পর বিএনপির মুখে নির্বাচন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আর কোনো কথা বলার যৌক্তিকতা থাকে না। তারা ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ’ ধরনের একটা আচ্ছন্ন মানসিকতায় ভুগছে।

‘সাধারণ নির্বাচনের মানদণ্ড ঠিক আছে’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের নিজস্ব একটা হিসাব–নিকাশ আছে। পশ্চিমা বিশ্বের অ্যালায়েন্স (মিত্রতা), সে অ্যালায়েন্স রক্ষা করার বিষয়টি আছে। তারা কিছু নীতিমালা অনুসরণ করে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সুরেই কিছুটা সুর মিলিয়েছে।

তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যা বলেছেন, সেটাতেই সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, তাঁরা বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী। তা ছাড়া মানদণ্ডের বিষয়টি একেকজনের কাছে একেক রকম। বাংলাদেশে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল, এই নির্বাচনের মানদণ্ড যদি খুবই তলানিতে গিয়ে পৌঁছাত, তাহলে আজকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, হোয়াইট হাউসের প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাওয়া যেত না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের মানদণ্ড ঠিক আছে। বাংলাদেশের বাস্তবতায় নির্বাচনের মানদণ্ড ঠিক আছে। রিয়েলিটির (বাস্তবতা) সাথে আমাদের কন্টাক্ট (সংযোগ) আছে।’

সিঙ্গাপুর চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের কোনো বৈঠক হয়েছে কি না, এমন প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুনেছি তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কারও সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।