জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, ঢাবি ছাত্র হলছাড়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এক ছাত্রকে হলছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের একদল কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, ছাত্রলীগ কর্মীদের চাপের মুখে ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে হল ছেড়েছেন তিনি।

অভিযোগকারী ছাত্রের নাম কাজী সাকিব মিয়া। তিনি দর্শন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী আবু হাসান ওরফে রনি ও মশিউর রহমান ওরফে শান্ত তাঁকে ফেসবুকে লেখা বন্ধ না করলে হলছাড়া করার হুমকি দেন। পরে হল ছেড়ে রাজধানীর আজিমপুরের একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন তিনি। আবু হাসান ও মশিউর রহমান স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী এবং মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শহিদুল হক ওরফে শিশিরের অনুসারী।

কাজী সাকিব আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ৬ আগস্ট তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেন। পোস্ট করার পর আবু হাসান তাঁকে ফোন করে ডেকে পাঠান। যাওয়ার পর আবু হাসান ও মশিউর তাঁকে ওই পোস্ট দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন এবং পোস্টটি মুছে ফেলতে বাধ্য করেন। তবে তাঁর টাইমলাইনে পোস্টটি থেকে গিয়েছিল।

কাজী সাকিব বলেন, ‘মশিউর রহমান আমাকে বলেন, ছাত্রলীগের ঘরে থেকে ছাত্রলীগের সমালোচনা করা যাবে না, ছাত্রলীগের সমালোচনা করে হলে থাকা যাবে না এবং ছাত্রলীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লেখা যাবে না। পরে শাস্তি হিসেবে আবু হাসান ও মশিউর আমাকে হলের মূল ভবনের ১১২ নম্বর কক্ষ থেকে এক মাসের জন্য বর্ধিত ভবনের ১০২২ নম্বর কক্ষে পাঠিয়ে দেন। শর্ত ছিল, হলে থাকলে ছাত্রলীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লেখা যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যা ন্যায্য ও সত্য, তা ফেসবুকে লিখতে আমি ভালোবাসি। তাই বাধ্য হয়েই ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে হল ছেড়ে আজিমপুরে ভাড়া বাসায় উঠেছি।’

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত হল প্রশাসনের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি কাজী সাকিব মিয়া। তাঁর ধারণা, এ ধরনের ঘটনায় সাধারণত কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। তাই অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই।

এদিকে আবু হাসান ওরফে রনি কাজী সাকিব মিয়াকে হল ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমরা তাঁকে অন্য কক্ষে যেতে বলেছিলাম।’ এ ছাড়া অভিযোগ ওঠা অপর ছাত্রলীগের কর্মী মশিউরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

জানতে চাইলে মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কাজী সাকিব মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শহিদুল হকের গ্রুপে ছিলেন। সাকিব হল ছেড়ে দিয়েছে বলে শুনেছি। তবে কেন ছেড়েছে, তা আমার জানা নেই।’ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শহিদুল হককে ফোনে পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’