অংশীজনদের ইতিবাচক ভূমিকা প্রয়োজন

২৮ অক্টোবর ঢাকায় দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। দুই পক্ষের শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টায় রাজনীতি কোন দিকে এগোচ্ছে—এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবিরের অভিমত নিয়েছে প্রথম আলো।

এম হুমায়ুন কবির

২৮ অক্টোবরের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা আছে, এটি অস্বীকার করা যাবে না। কারণ হলো, অর্থনৈতিক একটি চাপ আছে। এর মধ্যে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা হয়, তাহলে সেটি মানুষের জন্য বড় চিন্তার কারণ হবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে একই দিনে দুই দলের সমাবেশ আরও হয়েছে। সেগুলো কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে।

২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরেও দুই দলের মধ্যে একটি ইতিবাচক মনোভাব দেখা যাচ্ছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর তারা ঢাকায় বসে যাওয়ার চেষ্টা করবে না, কর্মসূচি করে চলে যাবে। আবার সরকারও বলছে, সহিংসতা না করলে সমস্যা নেই। দুই দলের পক্ষ থেকেই আশ্বস্ত হওয়ার মতো কথা বলা হচ্ছে। আমরাও আশা করব, সবাই দায়িত্বশীল হবে। সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা যেন ব্যাহত না হয়, মানুষ যেন বাড়তি সংকটে না পড়ে, সেটি যেন সব পক্ষ মনে রাখে।

আর যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রভাব দুই দিক থেকেই দেখা যায়। এর প্রভাব আছে, আবার নেই। এই ভিসা নীতি নিয়ে খানিকটা বিভ্রান্তিও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন্তু পরিষ্কার করে বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করাকে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছেন।

নতুন ভিসা নীতির আওতায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে বা বাধা দেবে, তাদের ভিসা দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বাধা বলতে সহিংসতা, ভয়ভীতি ইত্যাদিও আছে। আমি মনে করি, এখানে ইতিবাচক দিক হলো সব অংশীজন কিন্তু সহিংসতা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন, সংযত থাকার চেষ্টা করছেন। এটি উৎসাহব্যঞ্জক।

মুক্তিযুদ্ধের মানুষ হিসেবে প্রত্যাশা থাকবে, রাজনৈতিক সংকটের ঘাটতির জায়গাগুলো সৃজনশীলতার মাধ্যমে পূরণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। এসব নিয়ে স্বাধীনতার এত বছর পরেও অন্যের কথা শুনতে হয়, এটি ভালো দেখায় না।

আমি মনে করি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে। এটি শুধু আজকের জন্য নয়, আগামী দিনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য প্রয়োজন। আর শান্তিপূর্ণ নির্বাচন খুব প্রয়োজন। তা না হলে পৃথিবীর সঙ্গে বিভিন্ন মাত্রায় সংযুক্তি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

তবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কিন্তু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা বলছেন। আশা করব, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে চলমান সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব হবে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব অংশীজনের কাছ থেকে ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা করছি।

  •  এম হুমায়ুন কবির যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত