খুলনা ও বরিশাল সিটির ভোট শুরু

খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল আটটা থেকে এ দুই নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। আজ দুই সিটির আট লাখের বেশি ভোটার মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবেন।

এর আগে মোটামুটি নির্বিঘ্নেই দুই সিটির নির্বাচনে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়। আজ ভোট গ্রহণের জন্য দুই সিটিতেই সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে । বি,কে ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশন, খুলনা সদর
ছবি : সাজিদ হোসেন

এবার খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন ও সংরক্ষিত ১০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সিটি করপোরেশনের মধ্যে মোট ভোটার রয়েছেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। মোট ২৮৯টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৩২টি কক্ষে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন পাঁচ প্রার্থী। তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা আবদুল আউয়াল, জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু, জাকের পার্টির এস এম সাব্বির হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুর রহমান (মুশফিক)।

আরও পড়ুন

আওয়ামী লীগ বাদে অন্য প্রার্থীরাও মনে করছেন, ভোটারের উপস্থিতি কম হবে। আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক নির্বাচনে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোট পড়বে বলে মনে করছেন। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে ধরা হচ্ছে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে। তবে ওই দলও মনে করছে, সর্বোচ্চ ভোট পড়বে ৪৫ শতাংশ। আর অন্যান্য দলের প্রার্থীদের আশঙ্কা, ভোট ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের বেশি পড়বে না। এর কারণ হিসেবে গত দুই নির্বাচনে অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন তাঁরা।

এবারের নির্বাচনে জয়ের চেয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াই প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আওয়ামী লীগ। ভোটারদের শান্তিপূর্ণভাবে কেন্দ্রে নিয়ে যেতে ইতিমধ্যে সব ধরনের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে দল থেকে। এ জন্য ওয়ার্ডগুলোয় কাউন্সিলর প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, যাতে কাউন্সিলর প্রার্থীরা কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে যেতে পারেন।

লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা। রূপাতলী হাউজিং আ. রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, বরিশাল।
ছবি: দীপু মালাকার

বরিশাল সিটিতে ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৪ জন। সিটির মোট ভোটকেন্দ্র ১২৬টি। এখানে ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩০ আর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংখ্যা ১০। কাউন্সিলর পদে প্রার্থী রয়েছেন ১১৬ জন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪২ জন।

এবার বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন— আবুল খায়ের আবদুল্লাহ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নৌকা), মো. কামরুল আহসান (স্বতন্ত্র, টেবিলঘড়ি) মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করিম (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাতপাখা), মো. আলী হোসেন হাওলাদার (স্বতন্ত্র, হরিণ), মিজানুর রহমান বাচ্চু (জাকের পাটি, গোলাপফুল), মো. ইকবাল হোসেন (জাতীয় পার্টি, লাঙ্গল) ও মো. আসাদুজ্জামান (স্বতন্ত্র, হাতি)।

বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থানে থেকে বিএনপি পাঁচ সিটির নির্বাচন বর্জন করেছে। যদিও কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। এবার বিএনপি কাউন্সিলর পদেও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচন না করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে বিএনপির ১৫ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩ জন প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের সবাইকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে দলটি। তাঁদের সঙ্গে বহিষ্কার করা হয়েছে মেয়র পদপ্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা ও সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসানকেও।

তবে জামায়াতের যে চারজন নেতা বরিশালে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, দলটি তাঁদের কোনো বাধা দেয়নি এবং সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থাও নেয়নি।