সরকারের কায়দাকানুনে নির্বাচনের খেলা প্রমাণ হয়ে গেছে: জাফরুল্লাহ চৌধুরী

জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা ভাসানীর কাগমারী সম্মেলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা
ছবি: প্রথম আলো

সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে বলে মনে করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সরকার যে কায়দাকানুন করছে, নির্বাচনের খেলাটা ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে। যিনি মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন, তাঁকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রধান করা হয়েছে। তার মানে এইচ টি ইমাম যেভাবে ফোন করে বলতেন ওই জায়গায় ভোটটা কইরা দেও, তিনিও সেটাই করবেন। আজকে আমাদের সতর্ক থাকা লাগবে।’

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা ভাসানীর কাগমারী সম্মেলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভাসানী অনুসারী পরিষদ এই আয়োজন করে।

১৯ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। গতকাল মঙ্গলবার সংসদীয় কমিটির সভা শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সে দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছে সংসদীয় কমিটি।

আজকের অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গে তুলে ধরে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্র থাকত, সরকারে যদি গণতন্ত্র থাকত, তাহলে গত পরশু আওয়ামী লীগের এক ব্যক্তিকে সব দায়িত্ব দেওয়া হতো না। গোপন ব্যালটে তাঁরাই ঠিক করতেন কে রাষ্ট্রপতি হবেন। এখানে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ন্যূনতম প্রয়োজন ছিল মেননের (ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন) মতো বা তাঁদের দল থেকেই রাষ্ট্রপতি করা। তবু কিছুটা হয়তো আশার সঞ্চার হতো। কিন্তু সেটা হয়নি। তাদের মধ্য থেকেই কাউকে না কেউকে হতে হবে তো...।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবাইকে অবশ্যই রাস্তায় থাকতে হবে বলেও মনে করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

ভারতের আদানি গ্রুপ যে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে, সেই কেন্দ্রের জন্য কয়লার দাম বেশি ধরতে চায় তারা। আদানি গ্রুপ প্রতি টন কয়লার দাম ধরতে চায় ৪০০ ডলার। অথচ বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত রামপাল এবং বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে করা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার দাম পড়ছে প্রতি টন ২৫০ ডলারের মতো। কিন্তু আদানি প্রতি টন কয়লার যে দাম প্রস্তাব করেছে, তা রামপাল ও পায়রার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি।

এ বিষয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আদানির কয়লার দাম এ দেশে আসার আগেই ৬০ ভাগ বেড়ে গেছে। যখন আসবে তখন কত হবে, তা আমরা জানি না।’
দেশের মানুষ অর্ধাহারে আছে উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মানুষের যে জীবনযাত্রা তা মানবিক নয়। কীভাবে ফুটপাতের দোকানদার, রিকশাওয়ালা বেঁচে আছেন, তা যে কেউ চাইলেই খোঁজ নিতে পারবেন। বাংলাদেশের নির্মাতা মাওলানা ভাসানী দাবি করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের কর্মসূচি মেনে নিয়েছে। আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি। আগামী অক্টোবরের মধ্যে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) যুগ্ম মহাসচিব কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ।