বাংলাদেশ যেন পরাশক্তির ছায়া যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত না হয়: এবি পার্টি

‘চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডর’ বিষয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিজয়নগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডর’ দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি বলেছে, বাংলাদেশ যেন কোনো পরাশক্তির ছায়া যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত না হয়। তবে চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে দলটি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা মানেই জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মনে করে এবি পার্টি।

‘চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডর’ বিষয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতারা এসব কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর যেন দক্ষ ব্যবস্থাপনার ছোঁয়ায় একটি আন্তর্জাতিক লজিস্টিক হাবে পরিণত হয়; যেখানে থাকবে সময়ের গুরুত্ব, পরিবেশ ও প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বচ্ছতা ও সর্বোপরি জবাবদিহি।

চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়ে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, এ উদ্যোগ আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে নতুন অর্থনৈতিক উচ্চতায় নিয়ে যাবে, যদি তা হয় দূরদর্শী, স্বচ্ছ এবং দেশপ্রেমের ভিত্তিতে। তিনি বলেন, অতীতের মতো পেছনের দরজার চুক্তি নয়, বরং জনস্বার্থ ও তথ্য-উন্মুক্তির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হলে এই বন্দর হতে পারে ‘দক্ষিণ এশিয়ার পরবর্তী সিঙ্গাপুরের’ ভিত্তিপ্রস্তর।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়ার আগে চারটি বিষয় খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে এবি পার্টি। সেগুলো হলো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যেকোনো চুক্তির আগে তাদের অতীত রেকর্ড, পরিচালন দক্ষতা ও চুক্তির শর্তাবলি জনসমক্ষে প্রকাশ করা। চুক্তির মাধ্যমে যেন দেশের সার্বভৌমত্ব বা নিরাপত্তা কোনোভাবে আপসের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করা। স্থানীয় জনশক্তি, শ্রমিক স্বার্থ ও দেশের অর্থনৈতিক লাভের দিকগুলো চুক্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা। পুরো প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জাতীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য।

বাংলাদেশ যেন কোনো পরাশক্তির ছায়া যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সতর্ক করেছে এবি পার্টি। ‘মানবিক করিডর’কে তথাকথিত উল্লেখ করে দলটি বলেছে, মিয়ানমার এখনো রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ নয়। এই পরিস্থিতিতে মানবিক করিডর তৈরি করা হলে তা দেশকে অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি ভূরাজনৈতিক সংঘাতের অংশ বানিয়ে ফেলবে। এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হবে না। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনই একমাত্র গ্রহণযোগ্য সমাধান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত, আলতাফ হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ নোমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স প্রমুখ।

আরও পড়ুন