ক্ষমতার ভারসাম্য প্রশ্নে আলোচনা এগোচ্ছে না

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মৌলিক সংস্কার না হলে অন্য যত বিষয়েই ঐকমত্য হোক, তাতে খুব বেশি লাভ হবে না।

সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের নবম দিনের আলোচনা হয়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতেছবি: পিআইডি

রাষ্ট্র পরিচালনায় ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং এক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা যাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে না যায়, সে জন্য সংবিধানে বেশ কিছু মৌলিক সংস্কার আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দফায় দফায় আলোচনা হলেও সব ক্ষেত্রে ঐকমত্য হচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানো, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ পদ্ধতিতে পরিবর্তন, সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করা এবং উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের মতো প্রস্তাবগুলো নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশির ভাগ দল এই প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত। তবে এই কমিটির বিষয়েও বিএনপিসহ কয়েকটি দলের জোরালো আপত্তি আছে। বিএনপি বলেছে, এ ধরনের কমিটি করা হলে সরকার দুর্বল হবে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবে বলেছিল, সাংবিধানিক সংস্কারের অন্যতম উদ্দেশ্য ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার উত্থান রোধ এবং রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিকেন্দ্রীকরণ ও পর্যাপ্ত ক্ষমতায়ন। এসব উদ্দেশ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা কমানো, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ পদ্ধতি বদলানো, চাইলেই যাতে কোনো সংবিধান সংশোধন করতে না পারে, সে রকম বিধান করাসহ কিছু মৌলিক সংস্কার প্রস্তাব আনা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মৌলিক সংস্কার না হলে অন্য যত বিষয়েই ঐকমত্য হোক, তাতে খুব বেশি লাভ হবে না। কোনো দল নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা বা সাংবিধানিকভাবে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঝুঁকি থেকেই যাবে। আর সংবিধানে শুধু এসব সংস্কার আনলেই হবে না, এমন বিধান করতে হবে, যাতে কোনো দল নিজেদের স্বার্থে চাইলেই সংবিধান সংশোধন করে ফেলতে না পারে।

ফ্যাসিবাদ যাতে ফিরে না আসে, ক্ষমতার ভারসাম্য ও প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তৈরি হয়, জবাবদিহি থাকে—এটাই জাতির প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা। রাজনৈতিক দলগুলো নিশ্চয় বুঝতে পারবে সংস্কার প্রস্তাব কতটা বাস্তবায়ন করলে সে আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।
আলী রীয়াজ, সহসভাপতি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি প্রস্তাব নিয়ে প্রথম পর্বে ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলোচনা করেছিল। এ আলোচনা চলেছিল দুই মাস (২০ মার্চ-১৯ মে)। প্রথম পর্বে ঐকমত্য হয়নি এমন ২০টির মতো বিষয়কে মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে চিহ্নিত করে ঐকমত্য কমিশন। সেগুলোর বিষয়ে ৩০টি দলকে একসঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা করছে কমিশন। গত ৩ জুন থেকে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ দিনে ১৩টির মতো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো হলো: ১. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন। এতে অর্থবিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। ২. সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব। এতে সরকারি হিসাব, অনুমিত হিসাব, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিশেষ অধিকার-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি—এই চারটিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদ সংসদে আসনের সংখ্যানুপাতে বিরোধী দলের মধ্য থেকে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বিরোধী দলগুলো সংসদে যে কটি আসন পাবে, তার অনুপাতে সংসদীয় কমিটির সভাপতি পদ পাবে। ৩. নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ। এ বিষয়ে আশু এবং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। ৪. রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান ৫. হাইকোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ ও ৬. পর্যায়ক্রমে উপজেলায় পর্যায়ে নিম্ন আদালত স্থানান্তর।

আলোচনা হলেও ঐকমত্য হয়নি এমন বিষয়ের মধ্যে রয়েছে, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি (এনসিসির পরিবর্তে নতুন প্রস্তাব); ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোট; দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও উচ্চকক্ষে নির্বাচনপ্রক্রিয়া; রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন; প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল (এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ কত সময় প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন); সংবিধানে রাষ্ট্রের মূলনীতি; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা; জরুরি অবস্থা জারির বিধান ও প্রধান বিচারপতির নিয়োগ। এসব বিষয়ে আরও আলোচনা হবে। এ ছাড়া সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি, উচ্চকক্ষের দায়িত্ব ও ভূমিকার মতো কিছু বিষয়ে এখনো আলোচনা শুরু হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও কয়েকটি মৌলিক সংস্কার নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা, ভবিষ্যতে কোনো দল চাইলেই যাতে সংবিধান পরিবর্তন করে ফেলতে না পারে, সে ধরনের বিধান নিশ্চিত করার কথা বলেছেন তিনি।

সাংবিধানিক পদে নিয়োগ

বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ ছাড়া রাষ্ট্রপতিকে অন্য যেকোনো কাজ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী করতে হয়। এতে নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগও কার্যত প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে।

এ কারণে সাংবিধানিক পদে নিয়োগের জন্য নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইনসভা—এই তিন অঙ্গের সমন্বয়ে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন।

কিন্তু শুরু থেকে বিএনপি এনসিসি গঠনের বিষয়ে জোরালো আপত্তি জানিয়ে আসছে। দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় সাংবিধানিক পদে নিয়োগ নিয়ে এখন পর্যন্ত তিন দফা আলোচনা হয়েছে। বিএনপিসহ কয়েকটি দলের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এনসিসি গঠনের প্রস্তাবটি বাদ দেয়। এর পরিবর্তে তারা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে।

এই কমিটিতে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার, প্রধান বিরোধী দল ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির একজন প্রতিনিধি, প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। এই কমিটির দায়িত্ব হবে—সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য নাম চূড়ান্ত করা। অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ ও তিন বাহিনীর প্রধান নিয়োগের বিষয়টি এই কমিটির দায়িত্বের বাইরে থাকবে।

জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশির ভাগ দল এই প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত। তবে এই কমিটির বিষয়েও বিএনপিসহ কয়েকটি দলের জোরালো আপত্তি আছে। বিএনপি বলেছে, এ ধরনের কমিটি করা হলে সরকার দুর্বল হবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে সাংবিধানিক পদে নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগও দলনিরপেক্ষ হবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে, যা ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে সহায়ক হবে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়ে দলগুলোর বেশির ভাগ একমত। তবে উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি ও ক্ষমতা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে বিএনপিসহ কয়েকটি দল এর বিপক্ষে। তারা নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায়।

অন্যান্য ক্ষেত্রে অবস্থা

এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন, এ প্রস্তাবে সব দল একমত। তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপির শর্ত আছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি করা হবে না, এই শর্তে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকালের বিষয়টি মেনে নেবে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের বিষয়ে দলগুলোর বেশির ভাগ একমত। তবে উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি ও ক্ষমতা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশির ভাগ দল উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে। অন্যদিকে বিএনপিসহ কয়েকটি দল এর বিপক্ষে। তারা নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন চায়।

আমাদের সহযোগিতা জাতি দেখছে। আলোচনা বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে, মানুষ দেখতে পাচ্ছে কার, কী ভূমিকা। কিন্তু অযৌক্তিক কোনো প্রস্তাব যেটাতে সরকার পরিচালনা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে, তাতে একমত হওয়া যায় না।
সালাহউদ্দিন আহমদ

জরুরি অবস্থা জারির বিধান নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সংশোধিত প্রস্তাবে বিএনপিসহ অনেক দল একমত। মন্ত্রিসভার অনুমোদনে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কিছু দলের আপত্তি আছে। দল দুটি সর্বদলীয় সংসদীয় কমিটির সুপারিশে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা জারি করবেন, এমন বিধান করার পক্ষে।

রাষ্ট্রের মূলনীতি প্রশ্নে একাধিকবার আলোচনা হলেও মতপার্থক্য দূর হয়নি। এ ক্ষেত্রে মূলত কিছু বামপন্থী দল এবং ইসলামি দলগুলো মোটাদাগে দুই ভাগে বিভক্ত। ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাবে বেশির ভাগ দলের আপত্তি আছে। এটি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনাও হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে বিএনপি প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ১০ বছর করার বিষয়ে একমত হয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি, ৭০ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের মতো বিষয়গুলোতে বিএনপি একমত হয়েছে। এর আগে ছয়টি সংস্কার কমিশনের বেশির ভাগ প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে।

জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপি আলোচনা চালিয়ে যাবে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা জাতি দেখছে। আলোচনা বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে, মানুষ দেখতে পাচ্ছে কার, কী ভূমিকা। কিন্তু অযৌক্তিক কোনো প্রস্তাব যেটাতে সরকার পরিচালনা ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে, তাতে একমত হওয়া যায় না।’

সংবিধান সংশোধন

বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে সংবিধান সংশোধন করা যায়। অর্থাৎ সরকারি দল এই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে তারা চাইলেই সংবিধান সংশোধন করতে পারে।

সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি নিয়ে কমিশনের প্রস্তাব হলো—সংসদ হবে দুই কক্ষের। সংবিধানের সব সংশোধনীর ক্ষেত্রে আলাদাভাবে উভয় কক্ষের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার অনুমোদন প্রয়োজন হবে। কিছু সুনির্দিষ্ট বিধান যেমন সংবিধানের প্রস্তাবনা, মূলনীতি, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ইত্যাদি সংশোধন করতে উভয় কক্ষের পাশাপাশি গণভোটে পাস হতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংবিধান সংশোধন পদ্ধতিকে কঠিন করার লক্ষ্যেই নতুন বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে। একক ক্ষমতা না থাকলে সরকারি দলকে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অন্যদের বোঝাতে হবে। একধরনের জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া সংবিধান সংশোধন করা যাবে না। তবে এটি নিশ্চিত করতে সংসদের উচ্চকক্ষের নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে হতে হবে।

এই প্রস্তাব নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। তবে এটি নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের আপত্তি রয়েছে। এ ছাড়া বিএনপি উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের বিপক্ষে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ফ্যাসিবাদ যাতে ফিরে না আসে, ক্ষমতার ভারসাম্য ও প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তৈরি হয়, জবাবদিহি থাকে—এটাই জাতির প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা। রাজনৈতিক দলগুলো নিশ্চয় বুঝতে পারবে সংস্কার প্রস্তাব কতটা বাস্তবায়ন করলে সে আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।

জাতির আকাঙ্ক্ষা সংবিধান সংস্কার কমিশন তুলে ধরেছে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ বলেন, এখন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কিছু মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার প্রস্তাব চিহ্নিত করেছে। যাতে একধরনের ব্যবস্থা তৈরি হয়, জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হয়। এগুলোর বাস্তবায়ন কেবল কমিশনের দায়িত্ব নয়, মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর।