প্রথম ধাপে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন কাল

প্রথম ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। স্থানীয় সরকারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারই প্রথম শুধু অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলায় আগামী ৮ মে ভোট হবে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ১৭ এপ্রিল, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে, আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল ও ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে।

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিলও ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলায় মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২১ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ হবে ২ মে ও ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে।

এবার দেশের ৪৮১টি উপজেলায় ভোট হবে চারটি ধাপে। বাকি দুই ধাপের তফসিল এখনো ঘোষণা করা হয়নি।

প্রথম ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে সিনিয়র জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আর সহকারী রিটার্নিং অফিসার হিসেবে উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক নিষ্পত্তি করবেন।

এদিকে এবার উপজেলা নির্বাচনের বিধিমালায় বেশ কিছু সংশোধনী এনেছে নির্বাচন কমিশন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ও নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় আনা এসব সংশোধনী এবারের নির্বাচনে কার্যকর হবে।

প্রথমবারের মতো অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তা ছাড়া মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ হিসেবে ‘হিজড়া’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ হিজড়ারা চাইলে হিজড়া পরিচয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। অন্য নির্বাচনে এই বিধান আগেই করা হয়েছিল। উপজেলায় তা সংযুক্ত করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে এত দিন ২৫০ জন ভোটারের সমর্থনসূচক সই মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। এবার সে বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে ভোটারদের সমর্থনসূচক সইয়ের তালিকা আর দিতে হবে না।

এত দিন চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের জামানত হিসেবে ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হতো। এবার দিতে হচ্ছে এক লাখ টাকা। ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিতে হচ্ছে ৭৫ হাজার টাকা। প্রার্থীরা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জামানতের যে টাকা জমা দেন, ভোট শেষে তা ফেরত পান। তবে এই টাকা ফেরত পেতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভোট পেতে হয়, না হলে জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এবার জামানত রক্ষায় আগের চেয়ে বেশি ভোট পেতে হবে। এত দিন প্রদত্ত ভোটের এক–অষ্টমাংশ বা প্রায় সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট পেলে জামানত রক্ষা হতো। এবার প্রার্থীদের পেতে হবে প্রদত্ত ভোটের ১৫ শতাংশ।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো পদে একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে আবার ভোট করার বিধান ছিল। এখানে এবার সংশোধনী আনা হয়েছে। একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে লটারিতে।