ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশের দাবি জানাল বাম গণতান্ত্রিক জোট

মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা–কর্মীরা। ১৯ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা
ছবি: প্রথম আলো

কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়ে যাঁরা ফেরত দেননি, সেসব খেলাপির তালিকা এবং কীভাবে ওই ঋণ দেওয়া হয়েছিল, সেই তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা অর্থ পাচারের অনুসন্ধান এবং শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিও জানায়।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এসব দাবিতে বিক্ষোভ করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে জোটের নেতা-কর্মীরা সমাবেশ করেন।

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, লুটেরাদের প্রশ্রয় দিয়ে ব্যক্তি খাত (প্রাইভেট সেক্টর) গড়ে তোলা যায় না। এটা হয় স্বজনতোষণমূলক পুঁজিবাদ। এ ধরনের ব্যবস্থায় শাসক দল পরিবর্তিত হলে সুবিধাভোগী ব্যক্তিরও পরিবর্তিন হয়। ফলে এ ব্যবস্থায় ব্যক্তি খাত দাঁড়ায় না। ঋণখেলাপিদের শক্তির উৎস ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনার দায় বাংলাদেশ ব্যাংক এড়িয়ে যেতে পারে না। ব্যাংকের তথ্য উন্মুক্ত ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। খেলাপি ঋণ আদায় ও পাচারের টাকা ফেরত আনার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এক সপ্তাহের মধ্যে খেলাপিদের তালিকা ও ঋণ অনুমোদনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

বামপন্থীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য নির্বাচন নিয়ে রাজপথে জনগণের পার্লামেন্ট বানাবে উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এই অবস্থান হলো জনগণের পার্লামেন্ট। এখানে জনগণের কথা বলা হলো। এরপর দুদক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামনে অবস্থান করা হবে। আগের সংসদে প্রকাশিত খেলাপিদেরÑবিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, সেটাও জানতে চান তিনি।

সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, সরকার শুধু লুটেরাদের পাহারাদার নয়, এরা এই লুটের অংশীদার। এদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তুলে মুক্তবাজারের অর্থনীতি বিদায় করে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, আওয়ামী লীগের দলীয় লোক যাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে উঠেছে, তাঁদের কারও টাকা ফেরত আনা হয়নি। এখন কিছু গোষ্ঠী, পরিবার সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাংক লুটপাট করে চলেছে।

সমাবেশে সিপিবির নেতা সাজেদুল হকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের নেতা আবদুস সাত্তার, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশের পরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা সড়ক দিয়ে পল্টন ও মতিঝিল হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফটকের সামনে যায়।