বিকল্প ব্যবস্থা না করে কোনো ব্যক্তির অধিকার হরণ করা চলবে না: মুজাহিদুল ইসলাম

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার হকারদের আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের কর্মসংস্থানের মৌলিক অধিকারকে সংকুচিত করে চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। তিনি বলেন, সরকার বেকারত্ব দূর করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির কথা মুখে বললেও বাস্তবে চরম কর্মহীনতা দেশের প্রধান সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হকারদের আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সংবিধানের ঘোষণা বাস্তবায়নে জীবিকা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বিকল্প ব্যবস্থা না করে কোনো ব্যক্তির ন্যায়সংগত কর্মসংস্থানের অধিকার হরণ করা চলবে না। অগণতান্ত্রিক পথে সরকার মানুষের জীবিকা উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখলে, দেশের জনগণও তাদের ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের চূড়ান্ত সংগ্রাম শুরু করবে। তিনি বিকল্প ব্যবস্থা না করে হকারসহ শ্রমজীবীদের উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানান।

সমাবেশে হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাশিম কবীর অভিযোগ করেন, ওপর থেকে নিচ, সর্বত্র ক্ষমতাসীনদের মধ্যে নতুন করে দখল ও বণ্টন চলছে। এরই অংশ হিসেবে খেটে খাওয়া মানুষের কর্মসংস্থান থেকে উচ্ছেদ করে শতকোটি টাকার চাঁদা বাণিজ্যে নতুন কর্ণধার নির্ধারণের প্রক্রিয়ায় মানুষকে নিঃস্ব করা হচ্ছে।

হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী বলেন, সরকার বড় বড় পুঁজির মালিকদের নানান সুবিধা দিলেও ক্ষুদ্র পুঁজির ব্যবসার ওপর আঘাত করছে। নগর উন্নয়নে হাজার হাজার প্রকল্প এবং বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও কখনোই হকার জনগোষ্ঠীর জন্য স্থায়ী পুনর্বাসন, টেকসই প্রকল্প গৃহীত হয়নি। উচ্ছেদ বন্ধ না হলে লক্ষাধিক হকার পথে বসবেন বলেও জানান তিনি।  

সমাবেশ থেকে বক্তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের লালবাগ বিভাগের বংশাল, কোতোয়ালি, সূত্রাপুর ও সদরঘাট এলাকায় নির্বিচার হকার উচ্ছেদ ও মালামাল ধ্বংসের প্রতিবাদ জানান। তাঁরা জীবিকা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ না করার দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঘোষণা করেন। সমাবেশ থেকে বলা হয়, মহান মে দিবসের আগে হকারদের ওপর জুলুম-নির্যাতন বন্ধ না হলে আগামী মে দিবসের কেন্দ্রীয় সমাবেশ থেকে আন্দোলনের বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন। এতে বক্তব্যে দেন কার্যকরী সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহসভাপতি মঞ্জুর মঈন, আফছার উদ্দিন, সহকারী সাধারণ সম্পাদক আনিস পাটোয়ারি, কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ, রহিম উল্লাহ্ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পুরানা পল্টন মোড় ঘুরে গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া হয়ে ঢাকা ট্রেড সেন্টারের সামনে গিয়ে শেষ হয়।