নিজেদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব দরকার: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মোহাম্মদপুরের গজনবী সড়কে আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ১১ মেছবি: দীপু মালাকার

নিজেদের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখা দরকার বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতের বন্ধু। এটা আমাদের স্বার্থেই দরকার। আমরা কারও দাসত্ব করি না। ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।’

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গজনবী সড়কে আয়োজিত আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে বিএনপি যে শত্রুতা করেছিল, তাতে লাভ হয়নি। শত্রুতার কারণে সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস জন্মেছিল। শেখ হাসিনা সব সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস ভেঙে দিয়েছেন। ভারত এখন আমাদের বন্ধু।’

সমাবেশে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা হঠাৎ চাঙা হয়ে গেছেন। এর কারণ ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে আসছেন। তাঁরা আবার ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর। লু আসছেন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে। বিএনপির স্বপ্নপূরণের জন্য নয়।

গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বক্তৃতাকে ‘মিথ্যাচার’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গয়েশ্বর কোথায় ছিলেন এত দিন? কোথা থেকে এলেন, কোথায় পালিয়ে ছিলেন? মাথায় তো দেখি গান্ধী টুপি। বিএনপি এখন ভণ্ডামি শুরু করেছে।

এ কায়দা আইয়ুব ও ইয়াহিয়া খানের আমলের উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দালালি কারা করে, সেটা সবার জানা। মোদির (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) নির্বাচিত হওয়ার দিন, সকালে বন্ধের দিন দূতাবাসে বিএনপির নেতারা ফুল, মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়েছিল। তাহলে দালাল কারা? খালেদা জিয়া ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানিবণ্টনের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। দেশে ফেরার পর সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি বললেন, গঙ্গার পানি চুক্তির বিষয়টি তিনি নাকি ভুলেই গিয়েছিলেন। তাহলে দালাল কারা?

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দেখলাম, তারা হাসিখুসি। ভারতের আপ্যায়নে, ডিনার খেয়ে বিএনপি নেতারা হাসিখুশি ছিল। ক্ষমতার স্বপ্নেও বিভোর ছিল। কিন্তু দেশের মানুষ তো ৪২ শতাংশ ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় বসিয়েছে। তিনি বলেন, এখন বিএনপি বলছে, জনগণ উপজেলা নির্বাচন নাকি প্রত্যাহার করেছে। তাহলে ৩৬ থেকে ৪০ শতাংশ ভোটার, যারা ভোট দিল, তারা কারা? আসলে দেশের মানুষ শেখ হাসিনার সততায়, উন্নয়নে এবং অর্জনে মুগ্ধ। তাই দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকেই বেছে নিচ্ছে৷’

বিএনপি নানা সময় নানা নাটক করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, একসময় জজ মিয়ার নাটক করল, নির্বাচনের আগে করল মিয়া আরেফির নাটক। তিনি বলেন, আবারও বিএনপির বিরুদ্ধে খেলা হবে। জনগণের জানমাল সুরক্ষায়, অপশক্তির বিরুদ্ধে খেলা আবারও হবে। প্রস্তুত থাকেন, এমন শিক্ষা দেব, পালাতে পালাতে অলিগিলি পার হয়ে বুড়িগঙ্গার পচা পানি খাবে।

বর্তমানে বৈশ্বিক নানা পরিস্থিতির কারণে দেশে চলমান কিছু সাময়িক সংকট দ্রুত কেটে যাবে বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের।

সমাবেশে সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কামরুল ইসলাম, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বিপ্লব বড়ুয়া, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা-১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন খান প্রমুখ।

গজনবী সড়কে একটি মঞ্চ করে সমাবেশ করা হয়। এ সময় ওই সড়কে পুরো যান চলাচল বন্ধ ছিল। সমাবেশ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।