নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কিছু বিষয়ে সংস্কার হতেই হবে: ইসলামী আন্দোলনের আমির
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সংবিধান, নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে ‘সংস্কার হতেই হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং বিচার বিভাগের প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে আগের তিমিরে ফেরত যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। তাই এসব ক্ষেত্রে সংস্কার হতেই হবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম এ কথাগুলো বলেন। রাজনীতিক, বিদেশি কূটনীতিক, সাংবাদিক, পেশাজীবীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে ওই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশে নির্বাচনহীন পরিস্থিতি দীর্ঘ হোক, ইসলামী আন্দোলন তা চায় না-—এ মন্তব্য করে রেজাউল করীম বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ করতে এবং নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুসৃত সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) নির্বাচন পদ্ধতির কথা উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে। এতে কার্যকর ও যথাযথ প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ গঠিত হবে। নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধ হবে।’
চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে চরমোনাইয়ের পীর বলেন, দীর্ঘ স্বৈরশাসনের পর একটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাহুমুক্ত হয়েছে। এখন সময় হলো বাংলাদেশ গড়ার।
পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের আমলের অপরাধীদের যথাযথ বিচারেরও দাবি জানিয়েছেন সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
অংশ নেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাসহ অনেকে
ইসলামী আন্দোলনের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাদের মধ্যে দলটির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য আবদুল মঈন খান ও সালাহ উদ্দিন আহমদ এবং ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু যোগ দেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানসহ দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান ও আবদুল হালিম অংশ নেন। আরও ছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমদ ও মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ একাধিক নেতা ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
ইসলামী দলগুলোর মধ্যে খেলাফত মজলিসের আমির আবদুল বাসেত আজাদ ও মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। ইসলামি বক্তা মাওলানা হাফিজুর রহমান, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদসহ অনেক আলেমও ইফতার মাহফিলে যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্র, চীন, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, আফগানিস্তান, ইরান, ভুটান, কসোভোর কূটনৈতিক মিশনের প্রধান ও প্রতিনিধিরা ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। এ ছাড়া দৈনিক ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, খবরের কাগজ সম্পাদক মোস্তফা কামালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকেরা ইফতার মাহফিলে যোগ দেন।