সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থায় বিপদ দেখছেন তারেক রহমান

‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রেছবি: প্রথম আলো

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত কি না, তা রাজনৈতিক দলগুলোকে বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘কোনো কোনো রাজনৈতিক দল সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি তুলেছে। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিধান রয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় এবং ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য এ ব্যবস্থাটি কতটা উপযোগী তা ভেবে দেখার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ রাখব।’

আজ মঙ্গলবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূতি উপলক্ষে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪ জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তারেক রহমান। ঢাকায় বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি। তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছিলেন প্রধান অতিথি। অনুষ্ঠানে তাঁর ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থাকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখতে হলে, বাংলাদেশকে তাঁবেদার মুক্ত রাখতে হলে এই মুহূর্তে জনগণের ঐক্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা দেশে ঐক্যের পরিবর্তে বিভক্তিমূলক সমাজ এবং অস্থিতিশীল সরকার সৃষ্টির কারণ হয়ে উঠতে পারে কি না, বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে আরও একবার ভেবে দেখার জন্য আমি সব রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বিনীত আহ্বান ও অনুরোধ করব।’

সভায় ভিডিও বার্তা দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে
ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

তারেক রহমান বলেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থার আড়ালে আবার দেশের রাজনীতিতে নিজেদের অজান্তে পতিত, পরাজিত, পলাতক, ফ্যাসিস্ট অপশক্তি পুনর্বাসনের পথ সুগম করে দেওয়া হচ্ছে কি না, এ বিষয়টিও প্রত্যেককে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবা দরকার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নিত্যনতুন বিষয় যদি আমরা সামনে নিয়ে আসতে থাকি, এর সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা মাথাচাড়া দেওয়ার সুযোগ পাবে।’

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকার গঠন করে জনগণের সব দাবি বাস্তবায়ন করা হবে—এ কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রধানতম কর্তব্য হচ্ছে, তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ করে জনশক্তি হিসেবে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। একই সঙ্গে রাষ্ট্র এবং সমাজে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত রাখা।’

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বিএনপির বিশেষ আলোচনা সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অনুষ্ঠানে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মীর মুগ্ধ, শহীদ ওয়াসিমসহ জুলাই শহীদদের অনেকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম ও খুনের শিকার অনেকের স্বজনেরা। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।