গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ের সাত দিন

শরিফ ওসমান হাদিছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ছিলেন শরিফ ওসমান হাদি। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে প্রচারে নেমেছিলেন। ১২ ডিসেম্বর তিনি গুলিবিদ্ধ হন। ১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সহযোদ্ধাদের চোখে তিনি এক লড়াকু যোদ্ধা। ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর গত সাত দিনে তাঁর জীবন-মৃত্যুর লড়াইসহ অন্য ঘটনাবলি পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।

১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার)

১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ব্যাটারিচালিত রিকশায় ছিলেন ওসমান হাদি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক ব্যক্তি। ফকিরাপুলের দিক (পূর্ব) থেকে তাঁরা পশ্চিমে বিজয়নগরের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁদের পেছন থেকে অনুসরণ করছিল একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে রিকশা চলন্ত অবস্থায় মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা ব্যক্তি ওসমান হাদিকে গুলি করেন।

ফাঁকা রাস্তায় মোটরসাইকেলটি দ্রুতবেগে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সেদিন বিকেলে বলেছিলেন, একটি গুলি ওসমান হাদির কানের ডান পাশ দিয়ে ঢুকে মাথার বাঁ পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। তাঁকে ‘লাইফ সাপোর্টে’ নেওয়া হয়েছিল।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা ওসমান হাদির প্রাথমিক অস্ত্রোপচার করেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত আটটার দিকে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।

মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে নেওয়া হচ্ছে এভারকেয়ার হাসপাতালে। ১২ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদী বিক্ষোভ–মিছিল হয়। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-সংগঠন নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দেন।

ঘটনার পর পুলিশ, র‍্যাব, সিআইডি ও পিবিআইয়ের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ শুরু করেন।

১৩ ডিসেম্বর (শনিবার)

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে শনাক্ত করার কথা ১৩ ডিসেম্বর জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তারা বলেন, ওসমান হাদিকে সরাসরি গুলি করা ব্যক্তির নাম ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল। তিনি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। গত বছরের ১ নভেম্বর পিস্তল-গুলিসহ ফয়সালকে গ্রেপ্তার করেছিল র‍্যাব। চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন।

পুলিশ সদর দপ্তর ফয়সালের ছবিসহ তথ্য সীমান্ত, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরের কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পাঠায়।

গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি জানান, অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালু হবে।

এভারকেয়ার হাসপাতালে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, ওসমান হাদির ‘ইন্টারনাল রেসপন্স’ আছে। তিনি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। চিকিৎসকেরা ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন তাঁকে। তাঁরা এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছেন না।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের বৈঠক হয়। ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে সর্বদলীয় প্রতিবাদ সভা করার সিদ্ধান্ত হয়।

১৪ ডিসেম্বর (রোববার)

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র ১৪ ডিসেম্বর জানায়, ঘটনায় জড়িত হিসেবে তিনজনকে শনাক্ত করা গেছে। তাঁদের মধ্যে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে গুলি চালান ফয়সাল। চালক ছিলেন আলমগীর শেখ। আলমগীর আদাবর থানা যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঘটনার আগে ওসমান হাদিকে অনুসরণকালে (রেকি) এই দুজনের সঙ্গে আরেকজন ছিলেন। তাঁর নাম জাকির। কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করে হামলাটি চালানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল দেশে বড় ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করা। হামলার পরপরই পালানোর ছকও কার্যকর করা হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ধারণার কথা জানায় যে ‘শুটার’ ফয়সাল ও আলমগীর ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই দুজনের সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করে ১৩ ডিসেম্বর রাতেই সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে মানব পাচারে জড়িত অভিযোগে দুজনকে আটক করা হয়। তাঁরা হলেন সঞ্জয় চিসিম ও সিবিরন দিও। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সঞ্জয় চিসিম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে দুজন বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতে পাচারে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা। এই দুজন ফয়সাল ও আলমগীর বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধারণা করে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুলিশ ইতিমধ্যে প্রধান সন্দেহভাজনের (ফয়সাল) চলাচলের খতিয়ান বা ট্রাভেল হিস্ট্রি সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা যায়, আইটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিনি কয়েক বছরে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই তাঁর সিঙ্গাপুর ভ্রমণের তথ্য পাওয়া গেছে।

রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করার আগ মুহূর্তের দৃশ্য
ছবি : সিসিটিভি ফুটেজ থেকে

র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, যে মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয়েছে, সেটির নম্বর শনাক্ত করে সন্দেহভাজন ‘মালিককে’ শনিবার বিকেলে মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর নাম মো. আবদুল হান্নান। পরে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

হান্নানকে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তিনি আদালতে বলেন, তাঁকে মোটরসাইকেলের বিক্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গেলেই সব সত্য বেরিয়ে আসবে। তিনি অনেক আগেই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে দিয়েছেন।

১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় অভিযান চালিয়ে ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে আটক করে র‍্যাব। পরে তাঁদের পল্টন থানায় সোপর্দ করা হয়।

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা হয়। মামলার বাদী ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ জাবের। মামলায় ফয়সালসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য ডিএমপির গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়।

ওসমান হাদিকে সোমবার আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্সে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়া হয় সিঙ্গাপুরে
ছবি: প্রথম আলো

১৫ ডিসেম্বর (সোমবার)

উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে তাঁর ভাই ছাড়াও বাংলাদেশি চিকিৎসক-নার্সরা যান।

তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র ১৫ ডিসেম্বর জানায়, দুই সন্দেহভাজন ফয়সাল ও আলমগীর ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। তাঁরা ঢাকা থেকে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তে যেতে পাঁচ দফা যানবাহন বদলান। মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ‘নম্বর প্লেট’ বদলে তাঁরা ভুয়া নম্বর প্লেট লাগিয়ে নিয়েছিলেন; ফেলে দিয়েছিলেন মুঠোফোন ও সিম।

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ সিপু, স্ত্রী সাহেদা পারভিন সামিয়া ও বান্ধবী মারিয়া আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই হামলার ঘটনায় মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা, শ্যালক ওয়াহিদ, বান্ধবী মারিয়া, মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে হান্নান এবং ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তার অভিযোগে সঞ্জয় চিসিম ও সিমিরন দিও।

ফয়সালের স্ত্রী, শ্যালক ও বান্ধবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত।

১৫ ডিসেম্বর র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফয়সালের সহযোগী মো. কবিরকে ১৪ ডিসেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কবির ঘটনার কয়েক দিন আগে ফয়সালের সঙ্গে বাংলামোটরে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়েছিলেন।

সোমবার ফয়সালের বোনের আগারগাঁওয়ের বাসা থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। সেই ব্যাগের ভেতর থেকে দুটি ম্যাগাজিন ও ১১টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

ওসমান হাদির ওপর হামলাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-সংগঠনের নেতারা।

ওসমান হাদিকে গুলি করার প্রতিবাদে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয় ‘সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ’। এতে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। তবে যায়নি বিএনপি। তবে তারা আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ সমাবেশে সংহতি জানায়।

১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার)

১৬ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে ইনকিলাব মঞ্চ জানায়, সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ার পর স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে। তাঁর আরেকটি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, তবে সেটি করার মতো শারীরিক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।

হুমায়ুন ও ওয়াহিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে নরসিংদীর সদর উপজেলার তরুয়া এলাকার একটি বিলের ভেতর থেকে ২টি পিস্তল ও ৪১টি গুলি উদ্ধার করে র‍্যাব। এ ছাড়া একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো. ফয়সল। তিনি ওয়াহিদের বন্ধু।

ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগম (৬০)
ছবি: র‌্যাবের সৌজন্যে

১৬ ডিসেম্বর রাতে র‍্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে ফয়সালের বাবা মো. হুমায়ুন কবির (৭০) ও মা মোসা. হাসি বেগমকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফয়সালকে গাড়ি ঠিক করে পালাতে ‘সহায়তাকারী’ নুরুজ্জামানকেও এদিন আটক করা হয়। তিনি ভাড়ায় চালিত গাড়ির ব্যবসা করেন।

তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সব মিলিয়ে এই ঘটনায় মোট ৯ জনকে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৭ ডিসেম্বর (বুধবার)

১৭ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বার্তায় বলা হয়, সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বুধবার দেশটিতে চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের অকুতোভয় যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে দেখতে গিয়েছিলেন। রাতে ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ফোন করে ওসমান হাদির চিকিৎসা কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করেন। ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন।’ প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে হাদির জন্য দোয়া ও প্রার্থনা করার অনুরোধ করেছেন।

হাদির ওপর হামলার ঘটনায় র‍্যাব ও পুলিশ মোট ১৪ ব্যক্তিকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা যায়।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার)

এ দিন সকাল থেকেই মানুষের মধ্যে ওসমান হাদিকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ছিল। তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে দিনভর সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছিল। এরপর বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সিঙ্গাপুরে ওসমান হাদির চিকিৎসা দেখভালের সঙ্গে যুক্ত থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ইনকিলাব মঞ্চের ফেসবুক পেজেও ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর জানানো হয়।