বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য ভারত দায়ী, অভিযোগ অলি আহমেদের
‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংস এবং স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভারত সরকার প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দায়ী’ বলে অভিযোগ করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমেদ। তিনি বলেন, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৯৪৭ সালের পর উপমহাদেশ ত্যাগ করে। বিগত কয়েক বছরে ভারত সরকার বাংলাদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অনুরূপ দায়িত্ব নিয়েছে। ভারত সরকারের বর্তমান মনোভাবের পরিবর্তন না হলে উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে—যা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজারে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অলি আহমেদ বীর বিক্রম এমন অভিযোগ করেন।
অলি আহমেদ বলেন, ‘আমি নিজে শুনেছি, কয়েক দিন পূর্বে ভারতে কংগ্রেসের সভাপতি একটি সংবাদ সম্মেলনে করে বলেছেন, আমরা পাকিস্তানকে দুই টুকরা করে তাদের দুর্বল করে দিয়েছি। তাঁর এই বক্তব্যে সুস্পষ্ট বোঝা যায়, বাংলাদেশের জনগণ তাদের বন্ধু নয়। আমরা জানি, ভারত সরকার তাদের পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমরা অন্য কোনো দেশের ব্যাপারে নাক গলাতে চাই না, অন্য দেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে চাই না।’
বিএনপির সাবেক এই নেতা বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমাদের দেশের সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর এবং বিভিন্ন সড়ক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে আপনাদের। এবং অনেকগুলো অসম চুক্তি করেছে। যার ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারপরও কেন ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে, তা বোধগম্য নয়। মেহেরবানি করে আমাদের মতো করে থাকতে দিন।’
এ অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্রের মর্যাদা হারাবে বলেও মন্তব্য করেন অলি আহমেদ। তিনি ভারত সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভারত সরকার কোনো গোষ্ঠী বা দলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া থেকে বিরত থাকবে। এবং ভারতের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে মনোযোগী হবে। ভারত সরকারের উচিত হবে না, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে শত্রুতামূলক আচরণ করা।’
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা টালমাটাল বলে মন্তব্য করেন অলি আহমেদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এখন আসল পরিশোধ দূরে থাক সুদের টাকাও পরিশোধ করার ক্ষমতা বর্তমান সরকারের নেই। বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তারা ডলার–সংকটের কারণে তাদের লাভের টাকা নিতে পারছে না।
দেশের বর্তমান অবস্থার জন্য সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতাকে দায়ী করে অলি আহমেদ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল আলম তালুকদার, নেয়ামুল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, কে কিউ স্যাকলায়েন, হামিদুর রহমান খান প্রমুখ। এ ছাড়া এলডিপির ওই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানও উপস্থিত ছিলেন।