সরকার কাউকে বিশৃঙ্খলা করতে দেবে না: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: প্রথম আলো

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, সারা দেশের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও (বিএনপির) সমাবেশে সরকার নিরাপত্তা দেবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার দেশে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেবে না। আমাদের নেতা–কর্মীদেরও কর্তব্য আছে। ১০ ডিসেম্বর কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালালে, আমাদের নেতা–কর্মীরা দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবে। সরকার সারা দেশে বিএনপির সমাবেশে নিরাপত্তা দিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও দেবে।’ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান চেয়েছিল, বরাদ্দও হয়েছে। কিন্তু তারা এখন রাস্তার বদলে রাস্তা চেয়ে বেড়াচ্ছে। যে ময়দান থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন, যে ময়দানে পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করেছিল, যেখানে তারাও অতীতে অনেক জনসভা করেছে। আমরাও সেখানে সমাবেশ করি, সেখানে যেতে এত অনীহা কেন! তারা রাস্তায় জনসভা করতে চায়, গাড়ি ভাঙচুর করতে চায়, জনজীবনে বিপত্তি ঘটাতে চায়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাংবাদিকেরা এবং শহরের সাধারণ নাগরিকেরা সড়কে জনসভার বিরুদ্ধে। কারণ, এতে মানুষের ভোগান্তি হয়। সমাবেশের জন্য মাঠের বিকল্প হিসেবে বিএনপি আরেকটা মাঠের কথা বলতে পারে। সোহরাওয়ার্দীতে না চাইলে তারা বাণিজ্য মেলার মাঠ বা আরও বড় বিশ্ব ইজতেমার মাঠ, যেখানে ২০ লাখ মানুষ ধরে, না হলে কামরাঙ্গীর চরের মাঠেও যেতে পারে। তারা সেটা বলে না, বলে এই রাস্তা না হয় ওই রাস্তা। মতিঝিল কেন তাদের পছন্দ। এর পেছনেও ষড়যন্ত্র, দুরভিসন্ধি আছে। তারা আসলে জনসভা করতে চায় না শুধু এটাকে ইস্যু বানাতে চায় এবং দেশে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টায় তারা আছে।’

বিএনপি নেতা ইশরাক ও রুহুল কবীর রিজভীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন–সন্ত্রাসীরা তো বিএনপির নেতা–কর্মী। আগুন–সন্ত্রাস করার জন্য বিএনপির নেতারাই নির্দেশ ও অর্থ দিয়েছিলেন। সেসবের অডিও রেকর্ডও আমাদের কাছে আছে। বিএনপি নেতাদের হাতে আগুন এবং মানুষের রক্ত লেগে আছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছে, এখন পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘টিভিতে তাদের যাঁরা বড় গলায় কথা বলছেন, তাঁদের হাতে মানুষের রক্ত। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। যাঁদের জামিন আদালত বাতিল করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। তবে জনগণ মনে করে, শুধু আগুন–সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেই নয়, আগুন–সন্ত্রাসের হোতাদের অর্থাৎ তাঁদেরকে যারা এ নির্দেশ দিয়েছেন, পরিচালনা করেছেন এবং অর্থ দিয়েছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের মালিক জনগণ। এ দেশে কে ক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না—সেটা জনগণ নির্ধারণ করবে। এখানে কূটনীতিকদের বেশি কথা বলার সুযোগ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি ক্ষণে ক্ষণে কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যায়। তাদের কোলে করে কেউ ক্ষমতায় বসাবে না। এ দেশে কূটনীতিকেরা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর ক্ষমতা রাখে না। কূটনীতিকদের কাছে বারবার ছুটে গিয়ে তারা নিজেদের দেউলিয়াত্ব প্রমাণ করছে। বিদেশি কূটনীতিকেরা যখন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে, আমি মনে করি তখন সেটি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে অনেক সময় হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায়, যেটি সমীচীন নয়। এ জন্য কোনো রাজনীতিকের বা কোনো রাজনৈতিক দলের কূটনীতিকদের উসকানি দেওয়া উচিত নয়।’