এই নৃশংসতা অন্তর্বর্তী সরকারের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ: জোনায়েদ সাকি
গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী বাংলাদেশে জনসমক্ষে পাথর দিয়ে মানুষ হত্যার মতো নৃশংসতা অন্তর্বর্তী সরকারের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। এ ছাড়া সীমান্তে একের পর এক মানুষ হত্যার দায়ে ভারতকে জাতিসংঘের অধীনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার গণসংহতি আন্দোলনের জাতীয় পরিষদের বর্ধিত সভায় জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। ঢাকায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের মেজর হায়দার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চলমান দলীয় কর্মসূচি ও অন্যান্য সাংগঠনিক বিষয়ে নেতা-কর্মীদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, চাঁদাবাজি ও বখরাবাজির কাঠামোকে অবিকল বহাল রেখে এই কাঠামোকে কেন্দ্র করে চলা সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। জনগণ এই আতঙ্ক তৈরির রাজনীতিকে আবার প্রতিষ্ঠিত করতে অভ্যুত্থান ঘটায়নি। এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে জনগণ আর বরদাশত করবে না। যাঁরা এগুলোকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিচ্ছেন, তাঁদের অবশ্যই এই রাজনীতি ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে হবে। না হলে মানুষ জবাব দিয়ে দেবে।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণ-অভ্যুত্থানের সমর্থন থেকে তৈরি হয়েছে। গত ১০ মাসে বারবার আহ্বান জানানোর পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে কোনো জোরালো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। বরং মব আক্রমণের মতো গণবিরোধী কর্মকাণ্ডকে তথাকথিত ‘প্রেশার গ্রুপ’ বলে একধরনের বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় মসজিদে ঢুকে ইমামকে কোপানোর ঘটনাতেও চিহ্নিত মব সন্ত্রাসীরা সমর্থন দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ সংস্কারের উদ্যোগকেও কার্যত ধামাচাপা দিয়ে ফেলে রেখেছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশ সংস্কারের কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া মানে এই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা।’
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান বলেন, অবিলম্বে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে স্পষ্টভাবে যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। জনগণের মনে আতঙ্ক তৈরির রাজনীতি এই বাংলাদেশে আর চলবে না।
সভায় অন্যদের মধ্যে গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের নেতা তাসলিমা আখতার, মনির উদ্দীন, হাসান মারুফ, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মুরাদ মোর্শেদ, বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, তরিকুল সুজন, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য নাজার আহমেদ, কেরামত আলীসহ দলের বিভিন্ন অঞ্চল ও শাখার নেতারা বক্তব্য দেন।